আজ প্রশ্ন তোলার দিন

-বিপ্লব  পাল 

দিল্লীতে স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট ওব ইন্ডিয়ার বোমাতে আবারো মৃত্যু জনা পঞ্চাশের। খই ভাজার মতন বোমা ফাটছে-মুরিমুরকির মতন গণহত্যা অব্যাহত-আরো কঠিন-এতকিছুর পরেও আমাদের প্রধানমন্ত্রীপুতুলটির দমদেওয়া লিপ সার্ভিস-এসব বরদাস্ত করবো না! পরের মুহূর্তেই এদের ই কেও মন্ত্রীসভা থেকে বলবে সিমি কে ব্যান করা কেন? পোটা আর ফিরিয়ে আনা হবে না। জনগণের গন্ডারের চামরা- মহান নেতাদের বেশ্যাবৃত্তি সহ্য করতে হবে। কানে, চোখে, পিঠে সর্বত্র!  

 ২০০৫ তে যখন দিল্লীতে বিষ্ফোরন হয়-তার একটা সবিস্তার বিশ্লেষন আমি করেছিলাম।

http://biplabpal2000.googlepages.com/Delhi.pdf 

আজ জনতার কাছে কিছু প্রশ্ন রাখবো।  এর উত্তর আমি দেবো না-আপনারাই নিজেদের মত করে খুঁজে নিন। তাহলেই এই সন্ত্রাসবাদ কুনাট্যের সব কুশীলবদের আপনারা চিনতে পারবেন। 

[]  মুসলমানরা কেন জঙ্গি হচ্ছে? 

·        হিন্দুরা তাদের ওপর অত্যাচার করেছে?

·         তাদের অর্থনৈতিক দুরাবস্থার জন্যে হিন্দুদের দায়ী করছে?

·         শিক্ষার অভাব-সরকারি টাকায় তাদের মাদ্রাসায় পাঠানো হচ্ছে কেন?

·          কোরানে প্যাগানদের বিরুদ্ধে যে জিহাদের কথা বলা আছে-সেটাই শাশ্বত বলে তারা মেনেছে?

·        নাকি উপোরক্ত সবকটি ব্যাপার সত্য?


[] রাষ্ট্রের বিলোপ না হওয়া পর্যন্ত কি সন্ত্রাসবাদ আটকানো সম্ভব? 

রাষ্ট্র-সব থেকে বড় সন্ত্রাসবাদি-পৃথিবীর সর্বত্র ই।  ভারতও ব্যাতিক্রম নয়। পুলিশ, মিলিটারির সন্ত্রাস এখানেও অব্যাহত। আবার এই সরকারি সন্ত্রাস ছারা, রাষ্ট্রও টেকে না। সন্ত্রাসবাদ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পালটা সন্ত্রাস। তাহলে রাষ্ট্র থাকলে-সন্ত্রাস থাকবে-এটা কি আমাদের মেনে নিতে হবে? 

[৩]পাকিস্তানে গণতন্ত্র ফিরতেই ইসলামিক সন্ত্রাসবাদ ব্যাপক ভাবে ফিরে এল। মুসলিমদেশ গুলিতে গণতান্ত্রিক পথেই ইসলামিক মৌলবাদের তীব্র উত্থান পরিলক্ষিত। মিশর, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া-এবং পাকিস্তান। কেন গণতন্ত্রের পথে মৌলবাদের দরজা খুলছে? মুসলমানরা কি তাহলে মৌলবাদি হতে চাইছেন? নাকি ইসলাম চাই মুসলমানরা মৌলবাদি হৌক? মৌলবাদের থেকে কি ইসলামকে আলাদা করা যায়? মৌলবাদ কি ইসলামের অবশ্য উপাদান? না মৌলবাদ সবধর্মের ই আবশ্যিক উপাদান-ইসলাম আলাদা কিছু নয়? প্রশ্ন হচ্ছে একটি ধর্মীয় গোষ্ঠিকে ধর্মনিরেপেক্ষ চেতনায় ফিরিয়ে আনতে কি ইসলামে সংস্কার আন্দোলন জরুরী?

[৪] পাকিস্তানকে দশ বিলিয়ান ডলার সাহায্য দিল আমেরিকা-সন্ত্রাস দমনের নামে। আমরা কি দেখলাম? ওই টাকাটা গেল ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদিদের মদত দিতে! সিয়া কিছুই জানত না? সম্প্রতি ওই টাকায় যে কোন কাজ হয় নি এবং তা ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে গেছে, তা স্বীকার করেছেন ওবামা নিজে। তাহলে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে সিয়ার ভূমিকা কি? আমেরিকা কি আদৌ চাইছে সন্ত্রাসবাদ কমুক-না পুরোটাই বজ্র আটুঁনি, ফস্কা গেরোর খেলা? যাতে যুদ্ধাস্ত্র আরো কিছু বেচা যায়?

[
] হিন্দুত্ববাদিদের ভূমিকাটা কি?  সবথেকে বেশী ফয়দা বিজেপির। পরের লোকসভা ভোটে বিজেপির অবস্থান বেশ শক্ত হচ্ছ-কারন কংগ্রেস এবং তার দলবল যে সন্ত্রাসবাদ দমনে কিছু করতে পারবে জনগন তা মনে করে না। বিজেপি শাসিত রাজ্যেও বিষ্ফোরন হচ্ছে-কিন্তু তারা অন্তত অপরাধিদের গ্রেফতার করতে সমর্থ। এই ইস্যুকে সম্বল করে তাদের মুসলীম এবং ইসলাম বিরোধি প্রচার অব্যাহত। এতে কি সন্ত্রাসবাদ কমবে? ঘৃণার বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ালে কি, ঘৃণা বিদ্বেশ কমে-না আরো বৃদ্ধি পায়? হিন্দু-মুসলমানদের পরষ্পরের প্রতি অবিশ্বাস-এই ভারত ই কি আমাদের কাম্য?

[
] তথাকথিত ধর্ম নিরেপেক্ষ দলগুলির ভূমিকা কি? প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লিপ-সার্ভিস দিচ্ছেন। পরের মুহূর্তেই লালু আর আহমেদ ভাই বলচ্ছেন সিমি সন্ত্রাসবাদি নয়। পোটা ফেরানো চলবে না! এটা কি গ্রেট কংগ্রেস সার্কাস? লোকে বোঝে না কে জোকার আর কে মুসলানদের তোষামদ করতে চাইছে? নাকি মুসলমানরাই এই তোষামোদে খুব খুশী? 

[৭] সন্ত্রাসবাদিদের মূল লক্ষ্য খিলাফতের প্রতিষ্ঠা। আরব থেকে ইন্দোনেশিয়ায়, অখন্ড শরিয়া ভিত্তিক মুসলিমরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা। ভারতীয় মুসলিমদের মধ্যে  কজন এতটা ধর্ম নিরেপেক্ষ হতে পেরেছেন, যে তারা  সন্ত্রাসবাদিদের খতমের  পথ সমর্থন না করলেও মত সমর্থন করেন না? না কি কংগ্রেস বা সিপি এম তাদের ধর্মনিরেপেক্ষ হতে দিয়েছে? এই দুটি দল সর্বদা মুসলমানদের জন্য শরিয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে-আর সিমি ভারত জুরে শরিয়াবাদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্যে বোমা ফাটালেই যত দোষ? আমাদের ধর্মনিরেপেক্ষ দলগুলি কি বিজেপির অন্য পিঠ নয়? 

[৮] ধর্ম ভালো-ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদি রা বাজে এই জাতীয় ধারনা কি ঠিক? কোরান এবং গীতাতে খুব পরিষ্কার ভাবেই বিধর্মী হত্যার নির্দেশ আছে। তবে শর্ত সাপেক্ষে।  প্রশ্নটা হচ্ছে শর্তটা ঠিক করার মালিক কে?  এভাবে কি বলা সম্ভব-এখানে এটি প্রযোজ্য নয়?  

 প্রশ্নগুলির উত্তর হয়ত আমরা খুব ভালো করেই জানি-বা জানি না। শুধু জানি-জনগন হয়ে জন্মালে-এই কুম্ভীপাকে মৃত্যুর ছায়ার সাথে লড়াই করতে করতে ই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে।

 


. বিপ্লব পাল, আমেরিকাতে বসবাসরত পদার্থবিদ, গবেষক এবং লেখক। এক সময় ভিন্নমতের মডারেটর ছিলেন, বর্তমানে www.fosaac.tv সম্পাদনার সাথে জড়িত।