প্রসঙ্গ: হুমায়ূন আহমেদের বক্তব্য
রতন
‘পাক সার জমিন সাদ বাদ‘ বইটির প্রতি হুমায়ূন আহমেদের ‘কুৎসিত‘ বক্তব্যাটি দেশের শতকরা ৯০ জনের হলেও, আমিও বিজ্ঞদের ন্যায় তুচ্ছ মনে করতাম। মন্তব্যাটি উচ্চশিক্ষিত পাঁচ জনের একজন ও ৫০০-এর বেশী পুস্তক লেখকের বলেই বিবেকের তাড়নায় দ’টি কথা লেখার কারণ।
‘সমকাল‘ এর প্রশ্নটি ছিলো ভূল; সংশোধনের ক্ষমতা বহির্ভূত ব্যক্তির নিকট সঠিক উত্তরও সম্ভব নয়।
ভূল প্রশ্নের শোচনীয় নিকৃষ্ট উত্তরে হিমু খ্যাত লেখক পাঠকদের আবারও জানালেন, ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ‘ ‘কুৎসিত‘; আর প্রথম স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে মেয়ের বান্ধবীকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহন করে প্রথম গোপন রাখা উৎকৃষ্ট।
আর এক প্রশ্নের উত্তরে, তিনি যে অসাংবিধানিক তাবেদার সরকারের ভূয়শী করেছেন, সে সরকারের পূর্ব সংকেত ছিলো ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ‘। হুমায়ূন আহমেদের দৃষ্টিতে ‘কুৎসিত‘ বইটি থেকে দেশের অসুস্থ রাজনৈতিক দলগুলো শিক্ষা গ্রহন করলে ১/১১ এর আবির্ভাব ঘটতো না।
কোন সুশীল সমাজের পটভূমিকায় ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ‘ লেখা হয়নি। বইটি লেখা হয়েছিলো মৌলবাদ ও মৌলবাদপুষ্ট কথিত গণতান্ত্রিক দলগুলোর সোচনীয় অসুস্থতার পটভূমিকায় সময়ের কারনে। তাদের আহত করে সুস্থতার ভাবনা জাগরণই ছিলো বইটির মূলকথা। পরিতাপের বিষয় বইটি আহত করেছে হুমায়ূন আহমেদকে।
হুমায়ূন আহমেদ এমনই লেখক যিনি ফুফুর গোপন চিঠি একাদশ শ্রেনীর মেধাবী ভাতিজাকে দিয়ে পড়ান। ‘মুকুল ভাই আমার আন্ডার গার্মেন্টেসের রং সবুজ রিয়া জানলো কি করে?‘ আরো প্রশ্ন করান, ‘ফুফুর সেক্স দেখেছো, কেনো দেখনি? আপনদের সেক্স দেখতে ভালো লাগেনা?‘
স্যাটানিক ভার্সেস সম্পর্কে ডঃ হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন, যারা বইটির কারনে বিদ্রোহ করেছে, তারা বইটি না পড়েই করেছে, পড়লেও মর্ম বোঝেনি। হুমায়ূন আহমেদের ক্ষেত্রে একই মন্তব্য বর্তায়।
মানুষ ভূল করে, সংশোধোনও হয়। বাংলার লেখকদের মধ্যে তার আভাস নগন্য। জীবিত অবস্থায় ডঃ হুমায়ুন আজাদ এমন একটি কথা বলেছিলেন, দুই ভাই মিলেমিশে যুব মগজের পতনে ব্যস্ত। তাঁর জীবিত কালে বাংলার কারো পক্ষেই উত্তর দেয়া সম্ভব বা সাহস হয়নি। মৃত্যর প্রায় চার বছর পর শোচনীয় উত্তর দিলেন হিমুর জন্মদাতা।
ডঃ হুমায়ুন আজাদ দেশের বুদ্ধিজীবিদের মগজ খুলতে ব্যর্থ হয়েছেন, কিন্তু বহু সুশীল পাঠকের জন্ম দিয়েছেন; যারা, তাঁর সম্পর্কে যুক্তিহীন কটুক্তি করলে তার সদোত্তর দিয়ে দিবেন।
মনে রাখা ভালো, তিনি মারা গেছেন সত্য, কিন্তু দেশের তথাকথিত বরেণ্যদের ইতিহাস প্রমান স্বরুপ রেখে গেছেন।
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, হুমায়ূন লিখতে একটি ‘ু‘ ও ‘ূ ‘ কারের পার্থক্য আছে। এটা কারো জানা না থাকলে, ডঃ হুমায়ুন আজাদের গ্রন্থ থেকে বুঝতে না চাইলে, জীবিত হায়াৎ মামুদের নিকট থেকে জেনে নেয়া ভালো। কেননা তেঁতুল টক; তার উপর ‘ ঁ‘ না বসালে তেঁতুল মিষ্টি হয়ে যায় না।
রেডিং, কালিফোর্নিয়া