কাজী মোতাহার হোসেন
বিজ�?ঞানচর�?চা ও বিজ�?ঞানচিন�?তা

৩০ জ�?লাই কাজী মোতাহার হোসেনের ১১০তম জন�?নবার�?ষিক। তা�?র বিজ�?ঞানচর�?চা নিয়ে লিখেছেন আব�?ল আহসান চৌধ�?রী

কাজী মোতাহার হোসেন (১৮৯৭-১৯৮১) তা�?র �?ক স�?নৃতিচর�?চায় নিজের যথার�?থ পরিচয় কোনটি সে বিষয়ে বলতে গিয়ে কিছ�?টা কৌত�?ক করে প�?রশ�?ন ত�?লেছিলেন, ‘আমার সম�?বন�?ধে কথা উঠেছে, আমি দাবাড়�?, না বৈজ�?ঞানিক, না সাহিত�?যিক?’ �? প�?রশ�?নের জবাবে অনায়াসে বলা যায়, মোতাহার হোসেন �?র সব কয়টি পরিচয়েই বিখ�?যাত ও বিশিষ�?ট। �?সব গ�?ণের যেকোনো �?কটিকে অবলম�?বন করেই তিনি জাতীয় ব�?যক�?তিত�?বের অধিকারী হতে পারতেন। তবে দাবাড়�? ও সাহিত�?যিক খ�?যাতির কাছে তা�?র বিজ�?ঞানসাধকের পরিচয়টি যে কিছ�?টা প�?রচ�?ছন�?ন−�? কথা অবশ�?য কব�?ল করতেই হয়।

কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন বিজ�?ঞানের ছাত�?র ও শিক�?ষক। তা�?র চিন�?তা-চেতনার �?কটা বড় অংশ জ�?ড়ে ছিল বিজ�?ঞান। বিজ�?ঞান নিছকই তা�?র পেশাগত পঠন-পাঠনের বিষয় ছিল না। অধ�?যয়ন-অধ�?যাপনার স�?ত�?রে বিজ�?ঞান বিষয়ে তা�?র সন�?ধিৎসা-কৌত�?হল ও মৌলিক চিন�?তাও ছিল। বিজ�?ঞানকে তিনি নিছক য�?ক�?তি-প�?রমাণের প�?রণালীবদ�?ধ শৃঙ�?খলা-শাস�?ত�?র বিবেচনা করেননি−তিনি �?কে দিয়েছিলেন সৃষ�?টিশীল শাস�?ত�?রের মর�?যাদা।
মোতাহার হোসেন তা�?র বিজ�?ঞানদৃষ�?টি ও চেতনার জন�?য জ�?যোতীন�?দ�?রমোহন রায়, ডব�?লিউ �? জেনকিন�?স, সত�?যেন�?দ�?রনাথ বস�? ও প�?রশান�?তচন�?দ�?র মহলানবীশের কাছে গভীরভাবে ঋণী। জ�?যোতীন�?দ�?রমোহন ছিলেন তা�?র স�?ক�?লজীবনের শিক�?ষক, জেনকিন�?স কলেজ-বিশ�?ববিদ�?যালয় পর�?যায়ের শিক�?ষক, সত�?যেন�?দ�?রনাথ বিশ�?ববিদ�?যালয়ের শিক�?ষক-সহকর�?মী ও প�?রশান�?তচন�?দ�?র তা�?র পরিসংখ�?যানবিদ�?যার গ�?র�?।

তা�?র সলতে পাকানোর কাজটি হয়েছিল ছেলেবেলাতেই। বাল�?যপাঠের কালে তা�?র গাণিতিকবিদ�?যার হাতেখড়ি হয়েছিল খেলার ছলে। মূলে ছিল তা�?র বাবার আন�?তরিক প�?রয়াস। �?র ফলে ‘অঙ�?কের জ�?ঞান’ সহজেই তা�?র ‘মনের ভিতরে সঞ�?চিত হয়েছিল।’ সেই ছেলেবেলাতেই তা�?র উদ�?ভাবনী শক�?তি জন�?ন নিয়েছিল। গ�?রামের স�?ক�?লের শিক�?ষক তা�?কে ‘যোগ-বিয়োগ ও গ�?ণনের পদ�?ধতি শিখিয়েছিলেন’। তারপর ভাগের নিয়ম তিনি ‘নিজে নিজেই আবিষ�?ককার করে’ শিক�?ষককে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। পরে যখন তিনি ক�?ষ�?টিয়া হাইস�?ক�?লের ছাত�?র, তখন যন�?ত�?র ও কল-কবজার প�?রতি কৌত�?হলের কারণে �?কবার কেমন বিপত�?তিতে পড়েছিলেন সে কথা জানা যায় তা�?র স�?ক�?লজীবনের স�?নৃতিকথায়।

�?ই ক�?ষ�?টিয়া হাইস�?ক�?লেরই শিক�?ষক ছিলেন জ�?যোতীন�?দ�?রমোহন রায়। মোতাহার হোসেন যা�?কে স�?ক�?ল-কলেজ-বিশ�?ববিদ�?যালয় মিলিয়ে তা�?র ‘শ�?রেষ�?ঠ শিক�?ষক’ বলে রায় দিয়েছেন। �?�?র কাছেই মোতাহার হোসেন নিচের ক�?লাসে জ�?যামিতি ও ওপরের ক�?লাসে মেকানিকস বা ‘গতিবিজ�?ঞান, স�?থিতিবিজ�?ঞান ও যন�?ত�?রবিজ�?ঞান’ পড়েছেন। তা�?র �? শিক�?ষকের পড়ানোর ধরনটাই ছিল আলাদা। ক�?লাসর�?মের বাইরে নিয়ে গিয়ে হাতে-কলমে জ�?যামিতি শেখাতেন। কখনো ছাত�?রদের নিয়ে যেতেন প�?রোনো নীলক�?ঠিতে তার ব�?যাসার�?ধ মেপে বের করার জন�?য। কখনোবা নিজে টিকিট কেটে ছাত�?রদের সার�?কাস দেখাতে নিয়ে যেতেন, বিনোদনের পাশাপাশি ‘ইনারশিয়া’ ও ‘সার�?ক�?লার মোশন’ বো�?ানোর জন�?য।

জ�?যোতীন�?দ�?রমোহন হাতে-কলমে বিজ�?ঞানশিক�?ষা দেওয়ার জন�?য ছাত�?রদের কাঠের গোল তক�?তায় কাগজ সে�?টে ‘গণিতমিটার’ তৈরি করিয়ে তাদের উদ�?ভাবন আগ�?রহকে উসকে দিতেন। শ�?ধ�? বিজ�?ঞানশিক�?ষা নয়, বিজ�?ঞানমনস�?কতা, ম�?ক�?তব�?দ�?ধি, নীতি-নৈতিকতা আর মানবিকতার প�?রথম পাঠও তিনি পেয়েছিলেন তা�?র �?ই স�?ক�?লশিক�?ষকের কাছ থেকেই।

অধ�?যাপক সত�?যেন�?দ�?রনাথ বস�? মোতাহার হোসেনের প�?রত�?যক�?ষ শিক�?ষক ছিলেন না−ছিলেন বিশ�?ববিদ�?যালয়ের বিভাগীয় সহকর�?মী। কিন�?ত�? জিজ�?ঞাস�? মোতাহার হোসেন �?কজন শিক�?ষার�?থীর কৌত�?হল নিয়েই কখনো গণিতের জটিল প�?রশ�?নের সমাধানের জন�?য তা�?র শরণাপন�?ন হতেন, আবার কখনোবা অধ�?যাপক বস�? নিজেও নানা ধরনের ‘ক�?ট অঙ�?কে’র সমাধান করতে গিয়ে তা�?কে ‘বাজিয়ে নিতেন’। মোতাহার হোসেন �?ভাবে অধ�?যাপক বস�?র প�?রিয় ও কাছের মান�?ষ হয়ে ওঠেন। অধ�?যাপক বস�?র প�?রেরণাতেই মোতাহার হোসেনের পরিসংখ�?যানবিদ�?যা শেখা সম�?ভব হয়েছিল। গণিতে মোতাহার হোসেনের আগ�?রহ ও অধিকার লক�?ষ করেই তিনি �? সিদ�?ধান�?ত নিয়েছিলেন। আর সেই তিরিশের দশকেই সত�?যেন বস�?র অন�?সরণে তিনি বাংলা ভাষায় পদার�?থবিদ�?যা পড়াতে শ�?র�? করেন। অধ�?যাপক বস�?র পরামর�?শে তিনি বাংলায় পদার�?থবিদ�?যার ব�?যবহারিক শিক�?ষার বইও লিখেছিলেন। বিজ�?ঞানের জটিল বিষয়কে ইংরেজি থেকে বাংলা ভাষায় রৃপান�?তরের �?ো�?কও সৃষ�?টি হয় অধ�?যাপক বস�?র উৎসাহে। সত�?যেন বস�?র কোয়ান�?টাম থিওরি সংক�?রান�?ত গবেষণা-নিবন�?ধ বাংলায় তর�?জমা করেন তিনি ‘�?লকবাদ’ নামে, ছাপা হয়েছিল প�?রবাসী পত�?রিকায় ।

সত�?যেন বস�? তা�?কে পরিসংখ�?যানবিদ�?যা পড়তে পাঠিয়েছিলেন ভবিষ�?যতের ভাবনা মাথায় রেখে। সত�?যেন বস�?র ‘স�?মেহ ও অন�?গ�?রহেই’ ১৯৩৯ থেকে তিনি তথ�?যগণিত পড়াতে শ�?র�? করেন। পরে �? বিষয়ে স�?বতন�?ত�?র বিভাগের সৃষ�?টি হয়,। আরও পরে প�?রতিষ�?ঠিত হয় ইনস�?টিটিউট। মোতাহার হোসেন সগর�?বে স�?নরণ করেছেন যে কলকাতা বিশ�?ববিদ�?যালয়ের আগেই ঢাকা বিশ�?ববিদ�?যালয়ে পরিসংখ�?যান বিভাগে স�?মাতক সম�?মান কোর�?স চাল�? হয়।
সত�?যেন বস�? শ�?ধ�? যে মোতাহার হোসেনকে পরিসংখ�?যানবিদ�?যা শিখতে পাঠিয়েছিলেন তা-ই নয়, ব�?লক ডিজাইন সম�?পর�?কে গবেষণায়ও তা�?কে উৎসাহিত করে তোলেন, তা�?র পি�?ইচডি গবেষণাপত�?রটিরও প�?রয়োজনীয় সংশোধন করে দেন। তা�?র �?ই গবেষণা অভিসন�?দর�?ভের �?কজন পরীক�?ষক ছিলেন বিশ�?ববিশ�?র�?ত পরিসংখ�?যানবিদ স�?যার রোনাল�?ড ফিশার। তিনি যে প�?রশংসাপূর�?ণ মন�?তব�?য করেছিলেন তার �?কটি বাক�?য ছিল �? রকম−‘হি হ�?যাজ গন মোর ডিপলি ইনট�? দ�?য সাবজেক�?ট দ�?যান �?নি প�?রিভিয়াস রাইটার। উত�?তর সময়ে মোতাহার হোসেন-উদ�?ভাবিত পদ�?ধতি সংখ�?যাতত�?ত�?বশাস�?ত�?রে ‘হোসেনস চেইন র�?ল’ নামে স�?বীকৃতি পায়।

ডব�?লিউ �? জেনকিন�?সের কাছে মোতাহার হোসেন নানা কারণে ঋণী। তিনি ছিলেন তা�?র পদার�?থবিজ�?ঞানের প�?রিয় শিক�?ষক। মেধাবী ও জিজ�?ঞাস�? ছাত�?র হিসেবে মোতাহার হোসেন জেনকিন�?সের মনোযোগ কেড়েছিলেন। ঢাকা বিশ�?ববিদ�?যালয় ছেড়ে যাওয়ার সময় মোতাহার হোসেনের কথা বিশেষ করে সত�?যেন বস�?কে বলে যান। �?র আগে ১৯২১ সালের গোড়াতেই জেনকিন�?সের কল�?যাণে �?ম�? পরীক�?ষার�?থী মোতাহার হোসেন নবপ�?রতিষ�?ঠিত ঢাকা বিশ�?ববিদ�?যালয়ে প�?রদর�?শক হিসেবে প�?রবেশের স�?যোগ লাভ করেন। কিছ�? পরে তিনি পূর�?ণ শিক�?ষক হিসেবে নিয়োগ পান। জেনকিন�?সের আন�?ক�?ল�?য তা�?র জীবন বিকাশের পথ খ�?লে দেয়।

বিজ�?ঞানের শিক�?ষক হিসেবে মোতাহার হোসেনের নিজস�?ব �?কটা পাঠদান-পদ�?ধতি ছিল। তিনি জটিল বিষয়কে সহজ করে মাতৃভাষায় বো�?ানোর পক�?ষপাতী ছিলেন। আর পাঠন-বিষয়ে উদাহরণ কিংবা সাদৃশ�?য-বিবরণ আহরণ করতেন শিক�?ষার�?থীদের অভিজ�?ঞতার জগৎ থেকে। ফলে তিনি সহজেই হয়ে উঠেছিলেন ছাত�?রপ�?রিয় শিক�?ষক। তা�?র পড়ানোর সহজ পদ�?ধতির দর�?নই নবপ�?রবর�?তিত পরিসংখ�?যানবিদ�?যার শিক�?ষার�?থীরা পরীক�?ষায় ভালো ফল করতে পারত। কলকাতা বিশ�?ববিদ�?যালয়ের পরীক�?ষকেরাও �?সব ছাত�?রের ‘গ�?ছিয়ে জওয়াব’ লেখার প�?রশংসা করতে ক�?ন�?ঠিত হননি।

তা�?র পাঠন-প�?রণালীর বৈশিষ�?ট�?য �?বং শিক�?ষার�?থীর প�?রতি গভীর মমতা ও মনোযোগের কারণে ছাত�?রদের স�?নৃতিতেও তিনি উজ�?জ�?বল হয়ে আছেন। কোনো যান�?ত�?রিক পদ�?ধতি নয়, গতান�?গতিক কোনো প�?রণালীও নয়, তিনি পড়াতেন নিজস�?ব �?ক ভঙ�?গিতে। তা�?র শ�?রেণীকক�?ষে পড়ানোর ধরনটি ছিল �? রকম: ‘...স�?বকীয়তা ও অভিনবত�?ব প�?রকাশ পেত দৈনন�?দিন ক�?লাসর�?মে তা�?র পড়ানোর মা�?েও। ...প�?রচলিত ফর�?ম�?লার ধারেকাছে না গিয়ে তিনি নিত�?যনত�?ন ফর�?ম�?লা ও পদ�?ধতি নিজেই উদ�?ভাবন করতেন। ...তিনি চাইতেন ছাত�?ররা যেন মূলস�?ত�?র (ফার�?স�?ট প�?রিন�?সিপাল) থেকে য�?ক�?তি প�?রয়োগের দক�?ষতা ও মানসিকতা অর�?জন করতে পারে। বই থেকে না-ব�?�?ে বা আধা ব�?�?ে ক�?লাসর�?মে বা পরীক�?ষার খাতায় উদ�?গীর�?ণ করা ছিল তা�?র অতি অপছন�?দ’ (কাজী ফজল�?র রহমান, ‘কাজী মোতাহার হোসেন: �?কজন সম�?প�?র�?ণ মান�?ষ’)।

পরিসংখ�?যানবিদ�?যা পঠন-পাঠনের ক�?ষেত�?রে মোতাহার হোসেন যেমন প�?রবর�?তকের দাবিদার, তেমনি বাংলায় বিজ�?ঞানচর�?চার ক�?ষেত�?রেও �? দেশে তা�?র ভ�?মিকা পথিকৃতের। আমাদের বেশির ভাগ বিদ�?বান-পন�?ডিতের মধ�?যে মাতৃভাষায় বিজ�?ঞানচর�?চা কিংবা পঠন-পাঠনের বিষয়ে �?কটা অনীহা বরাবরই লক�?ষ করা গেছে। �? ক�?ষেত�?রে পরিভাষাসহ নানা অজ�?হাত তা�?রা খাড়া করে থাকেন। মোতাহার হোসেন �?সব বক�?তব�?যকে ‘ছে�?দো য�?ক�?তি’ বলে বিবেচনা করতেন।

মোতাহার হোসেন বরাবর বাংলা ভাষার মাধ�?যমেই পড়িয়েছেন−প�?রথমে পদার�?থবিদ�?যা, পরে পরিসংখ�?যান। তবে পরিসংখ�?যানের শিক�?ষক হলেও মোতাহার হোসেনকে তা�?র পূর�?ব-বিষয় পদার�?থবিদ�?যার ক�?লাসও কিছ�? কিছ�? নিতে হতো। পদার�?থবিদ�?যার �?ক প�?রাক�?তন ছাত�?র তা�?র স�?নৃতিচারণায় উল�?লেখ করেছেন: ‘উচ�?চ বিজ�?ঞানের কথাও যে বাংলা ভাষায় সহজেই লেখা যায় �?বং বলা যায়, �?টা তা�?র কাছ থেকেই প�?রথম জানতে পারি’ (জামিল চৌধ�?রী, ‘অ�?যাবসেন�?ট মাইন�?ডেড প�?রফেসর’)।

বাংলায় বিজ�?ঞানচর�?চা, পঠন-পাঠন, বই লেখা ও তর�?জমার বড় সমস�?যা ও অন�?তরায় যে কেবল পরিভাষার নয়, মানসিকতারও−�? বিষয়ে মোতাহার হোসেন শ�?র�? থেকেই সচেতন ছিলেন। দেশভাগের পর শিক�?ষা বোর�?ড গণিতের পরিভাষা সৃষ�?টির যে উদ�?যোগ গ�?রহণ করে, তাতে মোতাহার হোসেনের সক�?রিয় ভ�?মিকা ছিল। পরিভাষার সমস�?যা যে বিজ�?ঞান পঠন-পাঠনের অন�?তরায় হতে পারে না, সে বিষয়ে তিনি স�?পষ�?টই তা�?র তথ�?য-গণিত বইয়ের ভ�?মিকায় বলেছেন। �? সমস�?যা মোচনের প�?রয়োজনে তিনি নিজেও অনেক পরিভাষা উদ�?ভাবন করেন �?বং তা সত�?যেন বস�? ও আরও অনেকের অন�?মোদনও পায়।

মোতাহার হোসেন নিজে বিজ�?ঞান বিষয়ে বইপ�?স�?তক ও প�?রবন�?ধ-নিবন�?ধ লিখে প�?রমাণ করেন যে মাতৃভাষায় বিজ�?ঞানের মতো গ�?র�?ভার বিদ�?যার চর�?চা সহজেই হতে পারে। তিনি তথ�?য-গণিত (১৯৬৯), গণিতশাস�?ত�?রের ইতিহাস (১৯৭০) ও আলোক-বিজ�?ঞান (প�?রথম খন�?ড, ১৯৭৫) রচনা করে যথাক�?রমে পরিসংখ�?যান, গণিত ও পদার�?থবিদ�?যা বাংলায় পড়ানোর পাঠ�?যপ�?স�?তকের অভাব অনেকাংশে মিটিয়েছেন। �?ই বই তিনটি তা�?র মাতৃভাষায় বিজ�?ঞান-চিন�?তারই ফসল, সেই সঙ�?গে প�?রেরণাসঞ�?চারী উজ�?জ�?বল দৃষ�?টান�?তও। �?কসময় তিনি স�?যার রোনাল�?ড ফিশারের পরিসংখ�?যান-সংক�?রান�?ত প�?রামাণ�?য গ�?রন�?থ স�?টাটিসটিক�?যাল মেথড-�?র বাংলা অন�?বাদেও হাত দিয়েছিলেন; নানা কারণে �? কাজটি সম�?পন�?ন হতে পারেনি।

১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম�?বর ঢাকা বিশ�?ববিদ�?যালয়ের �?ক বিশেষ সমাবর�?তন অন�?ষ�?ঠানে কাজী মোতাহার হোসেনকে সাম�?মানিক ‘ডক�?টর অব সায়েন�?স’ উপাধি প�?রদান করা হয়। �?ই সমাবর�?তন-সভায় তা�?র পরিচিতি প�?রসঙ�?গে বলা হয়েছিল, ‘বাংলা ভাষায় বিজ�?ঞানচর�?চার যা�?রা স�?ত�?রপাত করেছেন, আপনি তা�?দের অন�?যতম অগ�?রণী।’ �?ই স�?বীকৃতি নিঃসন�?দেহে তা�?র প�?রাপ�?য।

যৌবনের প�?রথমপর�?ব থেকেই বাংলা ভাষায় বিজ�?ঞানের নানা বিষয়ে প�?রবন�?ধ-নিবন�?ধ �?বং পরবর�?তী সময়ে বই লিখে মাতৃভাষায় বিজ�?ঞানচর�?চার জোরালো দৃষ�?টান�?ত স�?থাপন করেছেন মোতাহার হোসেন। �? ধারায় তিনি জগদীশচন�?দ�?র বস�?, রামেন�?দ�?রস�?ন�?দর ত�?রিবেদী, জগদানন�?দ রায় কিংবা সতেন�?দ�?রনাথ বস�?র যোগ�?য উত�?তরস�?রি।

কাজী মোতাহার হোসেন বিজ�?ঞানসাধনার পাশাপাশি সাহিত�?যচর�?চাতেও ছিলেন নিবেদিত। তাই তা�?র সাহিত�?যবিষয়ক মননশীল রচনায় নিরাবেগ-য�?ক�?তিনিষ�?ঠার বৈশিষ�?ট�?য �?বং বিজ�?ঞানবিষয়ক রচনায় সাহিত�?যের সংবেদনা ও রসবোধ �?বং সামাজিক কল�?যাণচিন�?তার ছাপও পড়েছে। তিনি নিজেও �? কথা বলেছেন: ‘বিজ�?ঞান যে সাহিত�?য-রসে সঞ�?জীবিত হয়ে প�?রকাশিত হতে পারে �?বং তা সমাজ ও জাতির মঙ�?গলসাধনে শ�?ভ ভ�?মিকা গ�?রহণ করতে পারে সেটা দেখানোও আমার উদ�?দেশ�?য’ (ভ�?মিকা, নির�?বাচিত প�?রবন�?ধ, প�?রথম খন�?ড)। তা�?র ‘কবি ও বৈজ�?ঞানিক’ প�?রবন�?ধে তিনি বিজ�?ঞান ও সাহিত�?যের সাদৃশ�?য-বৈসাদৃশ�?য নির�?দেশের পাশাপাশি �?দের পারস�?পরিক সম�?পর�?ক-স�?ত�?র আবিষ�?ককারের চেষ�?টাও করেছেন। বিজ�?ঞান ও সাহিত�?যের মধ�?যে �?কটা সমন�?বয়ের চিন�?তা তা�?র মনে যে সক�?রিয় ছিল, তা বেশ বো�?া যায়।

মোতাহার হোসেনের বিজ�?ঞানচিন�?তা ছিল নিখাদ ও য�?ক�?তিশাসিত। আমাদের দেশের অনেক মনীষীর মতো তিনি ধর�?ম �?বং বিজ�?ঞানের অযৌক�?তিক সমন�?বয় ও সরল সমীকরণে বিশ�?বাসী ছিলেন না। তাই তিনি স�?পষ�?টই বলতে পারেন: ‘বিজ�?ঞান ও য�?ক�?তির সহিত সংঘর�?ষে (অর�?থাৎ জ�?ঞানবিচার ও ব�?দ�?ধির ক�?রমিক উন�?নতির সঙ�?গে সঙ�?গে) ধর�?মের আন�?ষঙ�?গিক বিশ�?বাসগ�?লোর যদি �?কট�? পরিবর�?তন হয়, তবে তাহা দ�?ষণীয় নহে বরং সেইটিই প�?রয়োজন’ (সঞ�?চরণ)। সক�?রেটিস ও গ�?যালিলিওর সত�?য-প�?রকাশের চরম পরিণাম-ফলের দৃষ�?টান�?ত টেনে �? কথাও তিনি বলেছেন: ‘...মত বা মত প�?রকাশের স�?বাধীনতা না থাকলে পৃথিবীতে জ�?ঞানের উন�?নতি মারাত�?মকভাবে ব�?যাহত হত। বর�?বরতা স�?থায়ী করার শ�?রেষ�?ঠ উপায় হচ�?ছে নত�?নের সন�?ধান ছেড়ে দিয়ে স�?থায়ী হয়ে প�?রাতনকেই আ�?কড়ে বসে থাকা’ (কাজী মোতাহার হোসেন রচনাবলী, দ�?বিতীয় খন�?ড)। বিজ�?ঞানচর�?চায় তিনি ‘সংস�?কারম�?ক�?ত নিরাসক�?ত বিচার’কেই গ�?র�?ত�?ব ও প�?রাধান�?য দিয়েছেন। তা�?র বিবেচনায়, ‘...বৈজ�?ঞানিক সচরাচর দৃশ�?যমান জগতের প�?রত�?যেক বস�?ত�? ও ঘটনাকেই বিশেষভাবে পরখ করে দেখতে চান। তা�?র কাছে ইন�?দ�?রিয়ের অগোচর বিষয়াদির প�?রাধান�?য নাই’ (সঞ�?চরণ)।

বিশ�?বাস নয়, নির�?ভ�?ল তথ�?য আর অকাট�?য য�?ক�?তিই বিজ�?ঞানের প�?রধান অবলম�?বন−সিদ�?ধান�?তের মূল উপকরণ। তাই রক�?ষণশীল শাস�?ত�?রবিশ�?বাসী সাধারণের চোখে বিজ�?ঞানীর স�?বরৃপ ভিন�?নভাবে উদঘাটিত। তাদের কাছে বিজ�?ঞানীকে ‘বস�?ত�?তান�?ত�?রিক নির�?মম বিশ�?লেষক ও নাস�?তিক’ আখ�?যাও পেতে হয় অনেক সময়। কিন�?ত�? তা যে সঠিক মূল�?যায়ন নয়, য�?ক�?তি দিয়ে তা তিনি প�?রমাণ করেছেন।

কাজী মোতাহার হোসেনের বিজ�?ঞানদৃষ�?টির পেছনে নিছক জ�?ঞানস�?পৃহাই নয়, ছিল কল�?যাণব�?দ�?ধি ও মানবতাবোধের ধারণাও। তিনি ১৯৩৯ সালে অধ�?যাপক সত�?যেন�?দ�?রনাথ বস�?র �?কটি ইংরেজি প�?রবন�?ধের অন�?বাদ করেন ‘সভ�?যতা ও বিজ�?ঞান’ নামে। �? প�?রবন�?ধটি তর�?জমায় তিনি উদ�?ব�?দ�?ধ হন শ�?ভব�?দ�?ধির প�?রেরণা আর নিজের মতের প�?রতিফলন লক�?ষ করে। প�?রবন�?ধটির মূল বিষয় ছিল বিজ�?ঞানের আবিষ�?ককারের অপপ�?রয়োগ, �?র নারকীয় ধ�?বংসলীলা ও �?র ফলে সভ�?যতার সংকটের কথা �?বং সর�?বোপরি �?ই সমস�?যা-সংকট উত�?তরণের উপায়-নির�?দেশ।

মোতাহার হোসেন ছিলেন ব�?দ�?ধির ম�?ক�?তি-আন�?দোলনের অন�?যতম প�?রোধা। ১৯২৬ সালে ঢাকায় প�?রতিষ�?ঠিত ম�?ক�?তব�?দ�?ধিচর�?চার প�?রতিষ�?ঠান ‘ম�?সলিম সাহিত�?য-সমাজ’-�?র বীজমন�?ত�?র ছিল−‘জ�?ঞান যেখানে সীমাবদ�?ধ, ব�?দ�?ধি যেখানে আড়ষ�?ট, ম�?ক�?তি সেখানে অসম�?ভব’। সংস�?কারম�?ক�?ত, য�?ক�?তিবাদী, প�?রগতিশীল, কল�?যাণম�?খী সমাজ গঠনই ছিল �?র লক�?ষ�?য। ‘সাহিত�?যসমাজ’-�?র �?ক বার�?ষিক অধিবেশনের প�?রতিবেদনে মোতাহার হোসেন উল�?লেখ করেছিলেন: ‘আমরা চক�?ষ�? ব�?জিয়া পরের কথা শ�?নিতে চাই না, বা শ�?নিয়াই মানিয়া লইতে চাই না...। ...আমরা চাই জ�?ঞান-শিখা দ�?বারা অসার সংস�?কারকে ভস�?নীভ�?ত করিতে �?বং সনাতন সত�?যকে ক�?হেলিকাম�?ক�?ত করিয়া ভাস�?বর ও দীপ�?তিমান করিতে’ (শিখা, দ�?বিতীয় বর�?ষ, ১৯২৮)। �?ই সংগঠনের চিন�?তা-চেতনার আলোকেই মূলত মোতাহার হোসেনের মন-মানস গড়ে উঠেছিল। ‘সাহিত�?যসমাজ’-�?র �?ই য�?ক�?তির-প�?রজ�?ঞার-বিজ�?ঞানমনস�?কতার প�?রেরণাতেই চিরকাল পথ চলেছেন মোতাহার হোসেন।

সত�?যের অন�?রোধে �? কথা বলতেই হয় যে আমাদের দেশে বিজ�?ঞানচর�?চা যা�?রা করে থাকেন, বিজ�?ঞান পঠন-পাঠনের সঙ�?গে যা�?রা য�?ক�?ত, তা�?দের অনেকেই প�?�?থিশাসিত বিদ�?বান। তা�?রা সংস�?কার, গো�?ড়ামি, অন�?ধবিশ�?বাস, ভাবাল�?তা, রক�?ষণশীলতা, শাস�?ত�?রের দাসত�?ব থেকে প�?রোপ�?রি ম�?ক�?ত নন। কিন�?ত�? মোতাহার হোসেন কখনো অন�?ধবিশ�?বাস বা প�?রথার আন�?গত�?য করেননি, মানেননি সংস�?কারের শাসন−ছিলেন য�?ক�?তি, প�?রগতি ও শ�?রেয়চেতনার পক�?ষে−পরিপূর�?ণ বিজ�?ঞানমনস�?কতায় সমর�?পিত সৃজনশীল �?ক বিজ�?ঞানসাধক। কাজী মোতাহার হোসেনের সঙ�?গে �?খানেই অন�?যদের মৌলিক ফারাক �?বং �?ই বিবেচনাতেই তিনি �?কক ও অনন�?য।