অভিজিৎ রায়ের লেখার বিষয় নির্বাচন ও উদাহরণে বৈচিত্র্য প্রসঙ্গে
গীতা দাস
জীবন, জীবিকা, জীবনযাপন, মননশীল চর্চা, আত্মা, সংসার, দায়িত্ববোধ নিয়ে যখন চিন্তার আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছিলাম তখন আমার ছেলেমেয়ের মাধ্যমে মুক্ত-মনা ওয়েব সাইটের সন্ধান পাই। অভিজিৎ রায় সহ অনেকের লেখা আমার চিন্তা-ভাবনাকে স্তর-বিন্যাস করতে, জীবনের সংজ্ঞাকে নতুন করে চিনতে সহায়তা করেছে। ছাত্র-জীবনের পাঠ্য পুস্তকের বাইরে পড়ার যে আগ্রহ তা মধ্য তিরিশে হারিয়ে ফেলেছিলাম । এ মধ্য চল্লিশে এসে মুক্ত-মনার অনেকের লেখার আবেদন আমার পাঠ্যাভাসকে চাঙ্গা করে তুলেছে।
ছাত্রাবস্থায় কষ্ট করে, প্রয়োজনীয় কিছূ খরচ কমিয়ে হলেও বই কিনতাম। চাকুরিজীবনে এ মনোভাবের পরিবর্তন ঘটে। স্বচ্ছল অবস্থায় থেকেও অস্বচ্ছল মনেবৃত্তির সৃষ্টি হয়। বই কেনার আগ্রহ উবে গিয়েছিল । এখন আবার শুরু করেছি।
এক দশক যাবৎ লেখালেখিও বন্ধ। এখন মুক্ত-মনার প্রভাবে প্রকাশের প্রসবোন্মুখ বেদনা অনুভব করছি।
ছোটবেলায় পড়া ------- যা বড়বেলায়ও বয়ে চলেছিলাম সেই
‘পুতুল পূজা করে না হিন্দু
কাঠ মাটি দিয়ে গড়া
মৃম্ময়ী মাঝে চিন্ময়ী হেরে
হয়ে যাই আত্মহারা। ’
সেই আত্মহারা যেন সম্বিত ফিরে পাই। চিন্ময়ী রূপ পরিবর্তিত হচ্ছে --- রূপান্তরিত হচ্ছে মাটির মানুষে । চল্লিশের শুরুতেই ভাবনায়--- চেতনায় --- চিন্তায় যে বেতাল সৃষ্টি হয়েছিল তা সুবিন্যস্ত করছি -এ মধ্য চল্লিশে। সৃষ্টি, সৃষ্টিকর্তা, জীবন-মৃত্যু, জগত সংসার নিয়ে নতুন চেতনার উন্মেষ ঘটছে।
আশৈশব লালিত আত্মার অবিনশ্বরতায় বিশ্বাসী মনও আন্দোলিত হয়, আলোড়িত হয় অভিজিৎ-এর শাণিত যুক্তিত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় ও বস্তুনিষ্ঠ উদাহরণে । তিনি যে একজন পড়–য়া এবং জ্ঞান অনুসন্ধানকারী তা তার লেখায় স্পষ্ট। বিজ্ঞান, সাহিত্য ও ধর - এ সব বিষয়ে তার অগাধ পড়াশুনার প্রমান মেলে।
যাহোক, অভিজিৎ রায়কে অনুরোধ করছি লেখার বিষয় নির্বাচন ও উদাহরণে বৈচিত্র্য আনতে। কারণ তার কাছ থেকে পুনরাবৃত্তি প্রত্যাশিত নয়। যেমন: তার লেখা ‘প্রাণের প্রাণ জাগিছে তোমারই প্রাণে’ (১) এবং ‘আত্মা নিয়ে ইতং বিতং’ (২) প্রায় একই বিষয় এবং উদাহরণও সেই রমন লাম্বা। তার মত মেধা সচেতনভাবে নিজেকে চর্বিত চর্বণ থেকে মুক্ত রাখবেন --- এ আশা রাখি।গীতা দাস
আইয়নিক ক্রিসেন্ট,১১৬ মণিপুরীপাড়া, ঢাকা- ১২১৫
[email protected]
গীতা দাসের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে : অভিজিতের প্রতিক্রিয়া