অন্তর্ঘাত

(রাজনৈতিক উপন্যাস)

আবুল হোসেন খোকন 

[ সত্তর দশক বিশেষ করে স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে সামরিক শাসনের পটভূমিকে ভিত্তি করে এই রাজনৈতিক উপন্যাসটির অবতারণা অপ্রকাশিত এ পাণ্ডুলিপির অংশবিশেষ ধারাবাহিকভাবে মুক্তমনায় তুলে ধরা হলো লেখক

পার্ট - ১ 

বিনু ভাবছিল, বিপ্লবের জন্য উর্বরক্ষেত্র তৈরি করেছিল ওরাআর কিছুটা সময় পেলেই সফল হতে পারতোকিন্তু গভীর ষড়যন্ত্র এবং অন্তর্ঘাত সর্বনাশ করে দিয়েছেএমন কি অনুকূল ভবিষ্যতটাকেও ওরা ধুলিস্যা করে দিতে চাইছেবিপ¬বের উল্টো ধারায় নিয়ে যেতে চাইছে সবকিছুকেবিনুর এখন বিশ্বাস হচ্ছে, ’৭১-এর সু-মহান জনযুদ্ধের পর বিনুরা যা করতে চেয়েছিল, তা আপাতত ব্যর্থ হয়েছেবিনুরা তেমন কিছুই করে যেতে পারছে নাগভীর হতাশায় কুঁকরে গেল ওসত্যিই কি কিছুই দিয়ে যেতে পারছে না ওরা? এতো আত্মত্যাগ, রক্তদান, জেল-জুলম-নির্যাতন ভোগ, জীবন বিসর্জন সবই কি বৃথা হয়ে গেল? আর ভাবতে পারছে না বিনুমাথা নিচু করে কাঁপতে লাগলো ও

   বেশ অনেক্ষণ ডুকরে ডুকরে কাঁদলোতারপর আস্তে আস্তে নিজের সত্ত্বায় ফিরে আসার চেষ্টা করলোনিজেকে প্রশ্ন করলো, সত্যিই কি এতো আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে? কেন যেন মনে হলো, এটা হতেই পারে না আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে নাএক একটি আত্মত্যাগ ভবিষ্যতের যাত্রাপথকে সঠিকভাবে চিনিয়ে দেয়, পথকে আরো সুগম করে দেয় আত্মত্যাগে কারো ক্ষতি হয় ঠিক, কিন্তু সমষ্টির জন্য তা হয় পাথেয়এই জায়গাটায়ই বিনু স্বস্তি পেতে চায়হ্যাঁ, ও এবং ওর পার্টির কমরেডরা অনেক আত্মত্যাগ করেছে, কিন্তু প্রত্যাশিত সময়ে লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হলেও চলার পথ, পথের শত্র“, ষড়যন্ত্র এবং অন্তর্ঘাতিদের চিনিয়ে দিতে পেরেছেএ থেকে ভবিষ্যত লড়াকুদের পথ সুগম হবেএ পথ এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মের বিজয়কে নিষ্কণ্টক করবেবিপ্লব হবে দীর্ঘজীবী নিশ্চয়ই হবে, হতেই হবে 

    বাইরে হঠা ঝটপট শব্দে সম্বিত ফিরে পেল বিনুপুরো স্বাভাবিক হবার আগেই দড়াম করে কাঠের দরজা খুলে গেলসেখানে উদ্ভ্রান্ত দাঁড়িয়ে রিতু অপেক্ষা না করে ভিতরে ঢুকে পড়লো এবং হরবর করে যা বললো তাতে থ হয়ে গেল বিনুরিতু বললো, ওই চিহ্নিত রাজাকার-আলবদর কমাণ্ডাররা সব খবর পেয়ে গেছেওরা সাদা পোশাকের সশস্ত্র লোক ডেকে এনেছেএলাকা ঘিরে ফেলেছে ওরাপালাতে হবেএক মুহূর্ত বিলম্ব নয় বলে বিনুকে তুলে নেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়লো রিতুবিনু হাত তুলে বাধা দিলোডান হাতে স্টেন তুলে নিলোবললো, পালাবার প্রশ্নই ওঠে নাতুমি চলে যাও এক্ষুণি চলে যাওআমি ওদের উচিত শিক্ষা দিচ্ছি

   কিন্তু ওর কথায় কান না দিয়ে আবারও এগিয়ে গেল রিতুসঙ্গে সঙ্গে ডান হাতের শক্ত ঝটকায় সড়ে আসতে হলোবিনু কঠোর দৃষ্টিতে রিতুর চোখে চোখ রেখে বললো, এটা আবেগের সময় নয়আমাকে নিয়ে কোনভাবেই আত্মরক্ষা করতে পারবে নাআমি সুস্থ হলে কথা ছিলআমাকে বাঁচানোর চেষ্টা করার অর্থ হবে, দুজনেরই একসঙ্গে মৃত্যুস্মরণ করো, শুধু দুজন নয়যাকে নিয়ে আগামী দিনের স্বপ্ন দেখছি, নতুন ভবিষ্যতের আশা করছি সেই স্বপ্ন এবং আশারও মৃত্যু হবেতুমি কি চাও সব শেষ হয়ে যাক?

   হতবিহ্বল রিতু মাথা নাড়লোবিনু বললো, সুতরাং ভবিষ্যতকে বাঁচাতে হবে, তোমাকেও বাঁচার চেষ্টা করতে হবেআর আমি! আমি তো মৃত্যুর ৯৯ ভাগ পূর্ণ করেই আছিতাহলে ভাবনা কিসের? যাও, দ্রুত চলে যাও ওরা এখানে এগিয়ে আসার আগেই

   ঠিক তখনই বাইরে থেকে হল্টবলে কেও চিকার করে উঠলোসাদা পোশাকের লোকেরা হালকা মেশিনগান বাগিয়ে মাটির ঘরটির দিকে এগিয়ে আসছেবিনু আবারও কঠোর চোখে রিতুর দিকে তাকালোরিতু যেন সম্বিত ফিরে পেলওর দুচোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়তে লাগলো জলের ধারাবিনুর ইশারায় তারপরেও ঘুরে দাঁড়ালো রিতু, এবং এগিয়ে গেল আরেকটি দরজার দিকেবিনু শেষ শব্দটি উচ্চারণ করলো, লং লিভ রেভ্যুলুশনআমি কভার করছি রিতু, তুমি এগিয়ে যাও

   রিতু আস্তে করে দরজা খুলে বেরিয়ে যেতেই একঝাঁক গুলিবৃষ্টি হলোবিনুর মনে হলো রিতুর ওপরই চালানো হয়েছেকঠোর হয়ে উঠলো ওর চোয়ালঠিক তখনই ওর অবস্থান লক্ষ্য করে আরেক ঝাঁক বুলেট ছুটে এলো এবং পাশের জানালা-কবাট ছিটকে খুলে পড়লো স্টেনের সেফটি ক্যাচে সিঙ্গল-সট ওপেন করে জানালার ফাঁক দিয়ে বাইরে লক্ষ্য করলো বিনু ডানহাতে স্টেনের নল টার্গেটে স্থাপন করলোনলের রেখায় পড়লো এগিয়ে আসতে থাকা এক পিস্তলধারীর মাথা ট্রিগারে সঙ্গে সঙ্গে চাপ দিলো প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে উঠলো বদ্ধ ঘর অন্যদিকে লুটিয়ে পড়লো পিস্তলধারীতার সঙ্গীরা কালবিলম্ব না করে মাটিতে শুয়ে পড়লোএবার বিনু সেফটি ক্যাচে অটো-সট ওপেন করলো এবং সাদা পোশাকধারীদের ওপর এক পশলা বুলেট ছুঁড়ে দিলোবেশ কয়েকজন সঙ্গে সঙ্গে চিকার করে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়লোঅবশ্য বাকি কয়েকজনের সাব-মেশিনগান থেকে ধেয়ে এলো ঝাঁকে ঝাঁকে বুলেটএসব লুফে নিলো মাটির দেওয়ালভাঙা জানালায়ও কয়েকটি বুলেট আঘাত করলোঝটকায় জানালার পাশটা খুলে পড়লোবিনুও সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা জবাব দিলোমনে মনে বললো, পুরো তিনটি ম্যাগজিন ভর্তি বুলেট রয়েছে তোমাদের জন্য সেইসঙ্গে চেষ্টা করলো বিছানা থেকে নেমে পড়তেকিন্তু বুলেটবিদ্ধ পা সহায় হলো নাদেহও সায় দিলো না উত্তেজনায় বিনু অবশ্য ভুলে গেল প্রচণ্ড যন্ত্রণার কথাজানালা দিয়ে আবার এক ঝাঁক বুলেট ঢুকে দেওয়ালের আরেক পাশে আঘাত করলোভেঙে চুরমার করে দিলো একটা কাঁচে বাঁধানো গ্রামীণ ওয়ালম্যাটবিনু আবার লক্ষ্য করলো বাইরে হামলাকারীরা গা-ঢাকা দিয়েছে পাশের বাড়ি এবং গাছ-পালার আড়ালেতবে একজনকে ওয়াকিটকি বের করে কথা বলতে দেখলোলোকটির কপাল বরাবর টার্গেট করে ট্রিগার টিপে দিলো বিনুসঙ্গে সঙ্গে কয়েক হাত দূরে ছিটকে পড়ে স্থির হয়ে গেল টার্গেটআরেক পাশ থেকে আবারও এক ঝাঁক বুলেটের পাল্টা জবাব এলো বিনুর দিকেতারপর স্থির হয়ে গেলসুনসান হয়ে গেল সবকিছু সময় কোন শব্দ থাকলো না গোলাগুলির

   মিনিটখানেক পর হ্যান্ড মাইক বেজে উঠলো বাইরেকেও বললো, ‘বাড়ির চারদিক ঘিরে ফেলা হয়েছেগুলি করবেন না, আত্মসমর্পন করুনকয়েক দফা একই কথা বলা হলোনিরবতা ভঙ্গ করলো বিনু ওর স্টেন থেকে এক পশলা বুলেট ছুঁড়ে দিয়েজানিয়ে দিলো আত্মসমর্পনের কোন ইচ্ছে ওর নেইলড়েই মরবে ওএতেকরে সব চুপচাপ হয়ে গেল আবারবিনু বুঝলো, নতুন কৌশলে এবার হামলা হবেকিন্ত ওরপক্ষে কিছুই করার নেইসুস্থ থাকলে দেখিয়ে দিতে পারতো কৌশল কাকে বলেকিন্তু এখন ও অসহায়, নিরুপায়

   অন্তত পাঁচ মিনিট কেটে গেল গ্রামবাসীর চিকার-আহাজারি এবং গুঞ্জন ছাড়া কোন সারাশব্দ নেইবিনু একটু সড়ে এসে দেওয়ালে বালিশটি রাখলোপিঠ এলিয়ে দিলোতারপর স্টেনে নতুন আরেকটি ম্যাগজিন ভরে দরজা বরাবর টার্গেট করলো অপেক্ষায় থাকলো শত্রমনে মনে বললো, প্রতিক্রিয়াশীলচক্র ধ্বংস হোক, সাম্রাজ্যবাদের দোসররা ধ্বংস হোক, দালালরা নিপাত যাক, সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক, লং লীভ রেভ্যুলিউশন, জয় হোক মেহনতি মানুষের

   বাঁ-হাতের দেওয়াল ফুটো করে একটি নল বেরিয়ে এলো এবং লক্ষ্যহীনভাবে এক পশলা গুলি ছুঁড়লোকোন জবাব দিলো না বিনুওদিকে গুলি ছুঁড়েই হামলাকারী নল বের করে নিয়েছেকয়েক সেকেন্ড অপেক্ষা করে বিনু ওই দেওয়াল লক্ষ্য করে পুরো এক ডজন বুলেট বৃষ্টি ছুঁড়লোওপাশে বেশ কয়েকজন আর্তচিকার করে উঠলোঠিক তখনই ডান দিক থেকে একইভাবে দেওয়াল ফুটো করে একটি এসএলআর-এর নল ঢুকে বুলেট নিক্ষেপ করলো বিনুর অনেকটা বাম দিকেজবাবে ওই নল লক্ষ্য করে আরও এক ঝাঁক বুলেট ছুঁড়ে দিলোএবারও আর্তচিকার করে উঠলো একজনবিনুর পিছন দিকের দেওয়ালে ব্রাশ ফায়ার করলো শত্রপক্ষকিন্তু পিছনটা শক্ত কাঠের আস্তরণে মাটির মোটা দেওয়াল থাকায় কোন কাজ হলো নাবিনু ভাবলো, এভাবে  এলোপাথারি জবাব না দিয়ে প্রতিটি বুলেটের হিসেব করে শত্রকে শায়েস্তা করতে হবেসে কারণে জবাব দেওয়া বন্ধ করলো ও অন্যদিকে শত্রপক্ষও নিরব হলো আবার

   বিনু অনেক কষ্টে খাট থেকে গড়িয়ে পড়লো নিচে প্রচণ্ড ব্যাথাকে পাত্তা না দিয়ে গড়িয়ে চলে এলো মূল দরজার কাছাকাছিফুটো দিয়ে দেখলো, জটলা করছে সাব-মেশিনগানধারী কয়েকজনওদের টার্গেট করে ট্রিগার টিপলোতারপর আরও খানিকটা এগিয়ে স্টেনের ব্যারেল ভাল করে বাইরে তাক করলোওপাশ থেকে এক ঝাঁক বুলেট ছুটে এলো এবং এর অন্তত দুটি বিদ্ধ হলো বিনুর ব্যান্ডেজ বাঁধা হাতে যন্ত্রণাকে পাত্তা না দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ওই লক্ষ্য বরারর ব্রাশ করলোআর্তচিকার ছড়িয়ে পড়লোপিছন দিক থেকে এক ঝাঁক বুলেট বিদ্ধ করলো বিনুকেঅনেক কষ্টে ব্যারেল ঘুরিয়ে পাল্টা জবাব দিলো ওতখনই ম্যাগজিন শূন্য হয়ে গেলরক্তে ভেসে যাচ্ছে বিনুর গোটা শরীরচেষ্টা করলো স্টেনের ম্যাগজিন খুলে ফেলতেএকহাতে কষ্ট হলোকিন্তু ম্যাগজিন রিলিজ করতে পারলোঅন্য ম্যাগজিনটি কোমরে রেখেছিলসেটা বের করলোতখনই ওর সামনে চাইনিজ টমিগান হাতে একজন এগিয়ে এলো এবং গোটা ম্যাগজিন শেষ করলো ওর বুক বরাবর ছিন্নভিন্ন দেহ নিয়ে লুটিয়ে পড়তে বাধ্য হলো বিনু 

(বারো) 

   বিনুকে হত্যার দৃশ্যটি নিজের চোখে দেখলো রিতুও আরেক ঘরে অনেক শিশু-নারী-পুরুষের ভেতরএরা সবাই একে অপরকে জড়িয়ে আহাজারি করছেএদের মাঝেই রিতুবিনুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে পেছনের দরজা খুলে এক লাফে এ ঘরে ঢুকে পড়েছিল ওঠিক তখনই ওকে লক্ষ্য করে শত্রপক্ষের এক ঝাঁক বুলেট ছুটে আসেকিন্তু গুলিবিদ্ধ হবার আগেই ভেতরে চলে আসে ওঅল্পের জন্য রক্ষা পায় রিতুকিন্তু এখন দেখতে পেলো কীভাবে ওর স্বামী বিনুকে একজন টমিগানধারী ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করলো, আর মাটিতে লুটিয়ে পড়লো বিনুর রক্তাক্ত দেহ

   শক্ত পাথর হয়ে কয়েক লহমা দাঁড়িয়ে থাকলো রিতুতারপর বিদ্যু গতিতে কোমর থেকে বের করে আনলো পিস্তলঘাতক টমিগানধারী কয়েক গজ দূরে সামনের উঠোনে দাঁত বের করে হাসছেলোকটার খুলি বরাবর টার্গেক করলো রিতু, সঙ্গে সঙ্গে টিপে দিলো ট্রিগারমনে হলো ঘাতকের মাথাটা বিস্ফোরিত হলো, মগজ ছড়িয়ে পড়লো সামনের উঠোন বরাবরএরপর আস্তে করে দেহটি বিনুর পাশেই ধপাশ পড়ে দাপাতে লাগলো এর কয়েক সেকেন্ড পরই ঝাঁক ঝাঁক বুলেট ছুটে এলো শত্রপক্ষের তরফ থেকেগুলিতে নারী-শিশুদের অনেকে হতাহত হলোরিতু সামনে এগিয়ে এসে শত্রদের লক্ষ্য করে কোন বিরতি না দিয়ে ট্রিগার টিপে চললো পাগলের মতোবুলেটে ধরাশায়ী হলো প্রতিপক্ষের বেশ কয়েকজনকিন্তু পাশ থেকে এক সাব-মেশিনগানধারীর ব্রাশ ফায়ারে রিতুর মুখমণ্ডল, গলা এবং পাজর এফার-ওফোর হয়ে গেললুটিয়ে পড়ার আগ পর্যন্ত রিতু ঘাতকটিকে লক্ষ্য করে ট্রিগার টিপে যেতে থাকলোদুটো বুলেট আঘাত করলো ঘাতককেতার হৃদপিণ্ড এবং কানের এপাশ দিয়ে ঢুকে ওপাশ দিয়ে বেরিয়ে গেল বুলেট

   তারপর সব শেষইতস্তত কিছু গুলির শব্দ হলো এবং তারপর হঠা করেই সব থেমে গেলনেমে এলো গভীর নিরবতা 

(তেরো) 

   হাসপাতালসদ্য ভূমিষ্ট শিশুর সুতীক্ষ্ণ চিকারে বিদীর্ণ চারপাশ শিশুটির পাশেই রক্তাক্ত মা রিতুওদের বেডের দুপাশে অনেক মানুষ এরমধ্যে ডাক্তার-নার্স ছাড়াও রয়েছে পুলিশ, গ্রামের নারী-পুরুষ এবং শিশুরাসবাই নির্বাকশুধু চিকার করে চলেছে একটি শিশুচিকারের মর্মবাণীতে কিছু ছিল ডাক্তার এগিয়ে এসে আলতো করে রিতুর মাথায় হাত রাখলোএখনও প্রাণপ্রদীপ নিভে যায়নি ওরহঠা চোখের পাতা কেঁপে উঠলোআস্তে আস্তে রিতুর চোখের পাতা সামান্য ফাঁক হলোদৃষ্টি চলে গেল ক্রন্দনরত শিশুর দিকে ঠোঁটটা একটু নড়লো, যেন হাসতে চেষ্টা করলোতারপর গ্রাম্য শিশুদের ওপর স্থির হলো চোখের মনিওভাবে স্থির হয়েই থাকলো ডাক্তার বললেন, শি ইজ নাউ ডেড 

সমাপ্ত


আবুল হোসেন খোকন : লেখক-সাংবাদিক, কলামিস্ট ও মানবাধিকার কর্মী।