মানবাধিকারের তীর্থভূমি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার
আজ শহীদ মিনার বিশ্ববাঙালি সহ মানব জাতির মাতৃভাষার আন্তর্জাতিক তীর্থস্থানে পরিনত হয়েছে। অন্যান্য সংস্কৃতির চেয়ে ও বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতির বিশ্বমানবতাবাদ যে কত বেশী শক্তিশালী তা আজকের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে তিলে তিলে প্রমাণিত হয়েছে। বাঙালি কবির কণ্ঠে ধ্বনিত হয়, ”বিশ্বমানব হবি যদি সম্পূর্ণ বাঙালি হও, / শাশ্বত বাঙালি হও।” তাইতো অতীশ দীপঙ্কর, লালন ফকির, ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যসাগর, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি নজরূল ইসলাম ও পল্লীকবি জসীম উদ্দীন সম্পূর্ণ বাঙালি হয়ে ও বিশ্বমানব। অহিংসার বিশ্বমানবতায় বাঙালি সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্মকথা “চর্যাপদে” আজ ও লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। স্বাধীনতা তত্ত্বের মর্মভেদী দেবদূত একুশের শহীদ ভাইসব। ১৯৫২ সালে ২১শে ফেব্র“য়ারীতে শুধুমাত্র মায়ের ভাষা বাংলা বর্ণমালার জন্যে সালাম বরকত রফিক জব্বার সহ অনেক শহীদদের জীবন দান আধুনিক মানব ইতিহাসের এক অভিনব গৌরবেজ্জ্বল অধ্যায়। “তোমার কীর্তির চেযে তুমি যে মহৎ, / তাই তব জীবনের রথ,/ পশ্চাতে ফেলিয়া যায় কীর্তিরে তোমারে,/ বারম্বার। / তাই চিহ্ন তব পড়ে আছে,/ তুমি হেথা নাই।” অবাক পৃথিবী তাকিয়ে আজ রয় মার্কিন যুক্তরাষ্ঠ্র বাংলাদেশের ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকে সশ্রদ্ধ অভিনন্দন জানাতে এসেছেন “আমেরিকা যুক্তরাষ্ঠ্রের সরকারি ডাক টিকেট” প্রকাশ করে। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের অমর একুশকে জাতিসঙ্ঘের ‘ইউনেস্কো সর্বপ্রথম বিশ্বব্যাপী “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে সশ্রদ্ধ স্বীকৃতি প্রদান করলে ও বিগত ষাট বছরের ইতিহাসে (১৯৪৭ - ২০০৭ পশ্চিমবঙ্গের কোন বাঙালি নেতা) ভারতের রাষ্ঠ্রপতি (বা প্রধানমন্ত্রী) পদে বাঙালি আজ পর্যন্ত নির্বাচিত হয়নি কেন? ধর্মকে বাদ দিয়ে ত্রিশকোটি বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধভাবে নানা সমস্যার কথা চিন্তা করতে হবে। একুশের ডাকে ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে ত্যাগ করে মানবাধিকারে উজ্জীবিত হয়ে গণতান্ত্রিক বাঙালি সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।মিলিটারি মার্কা ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অভিশাপে আজ আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ১৯৪৮ সালে বাংলাদেশে মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার কেড়ে নিতে ঢাকায় এসেছিল কায়দে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ধর্মভিত্তিক চোরাবালির রাজনৈতিক মঞ্চে ধর্মের মুখোষ পরে। বাংলাদেশ জুড়ে পাকিস্তানী বোরখার জাল ছিঁড়ে ফেলার সময় একাত্তরে আমাদের স্বাধীনতা সুধামাধুরী কে স্বাধীনতা বিষবৃক্ষে পরিনত করতে জামাত ১৪ই ডিসেম্বরে বাঙালি জাতির বুদ্ধিজীবিগণকে হত্যা করে। মৃত্যুর পর মৃত্যু পেরিয়ে বাঙালির ৮ই ফাল্গুন বা একুশ প্রত্যহ বাঙালির রক্তে রক্তে প্রবহমান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বজ্র্রকন্ঠে ধ্বনিত হয়, ”আমরা যখন মরতে শিখেছি, কেউ আমাদের মারতে পারবে না।” প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে, বাংলা সাহিত্যের সর্বপ্রথম বই “চর্যাপদের” অনুবাদ তিব্বতি ভাষায় বিদ্যমান এবং সর্বকালের জয় বাংলার গৌরব সন্তান অতীশ দীপঙ্করকে (৯৮২ - ১০৫৪) তিব্বত এবং চিনের জনগণ আজ ও সশ্রদ্ধ চিত্তে বিশ্বমানবতার দেবদূত রুপে অভিবাদন করেন।
একুশের ঐতিহ্যের স্বপক্ষে রুখে দাঁড়াতে গিয়ে বর্তমান সি আই ডি এডিশনাল আই জি জনাব ফণিভূষন চৌধুরী স্বরাষ্ঠ্র মন্ত্রনালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়ে কোন সাড়া পান নি। (দৈনিক সংবাদ, ১৩ই জানুয়ারী, ২০০৮ সাল)। উৎসে লোভী সেনানায়ক নয়, চাই উৎসে মনুষ্যত্ব। স্বাধীন বাংলাদেশে নজিরবিহীন ন্যক্করজনক ঘটনার জন্মদিল বিপ্লবি ফ্যাসিবাদী মিলিটারি মার্কা তত্ত্বাবধায়ক সরকার। বাংলাদেশ সেনা ইউনিফরম ধারীদের রাজ্যপাট বা জমিদারি নয়। মৃত্যুর পর মৃত্যু পেরিয়ে বাংলাদেশের শহীদ ছাত্রগণের আত্মায় স্বরের ধ্বনি প্রতিধ্বনি, ”জয় বাংলা।”
একাত্তরের পরাজিত শক্তি, ঘাতক, দালাল, নারী নির্যাতন কারী জামাত কি বর্তমান সরকারের পথপ্রদর্শক? মিলিটারি শাসকগণ তো আজ পাকিস্তানের গোলাম নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বপ্রথম বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ বপন করেছে এবং রাজাকার শাহ মোয়াজ্জেম প্রধানমন্ত্রী হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ধ্বংস করতে যুদ্ধাপরাধী ও জামাতকে নিযুক্ত করে চলে গেছে। যে কোন ধর্মের মর্মার্থ যাহা মনকে আলোকিত করে এবং বিশ্বের সকল প্রাণীর মঙ্গল করে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশে ধর্মের অপব্যাখ্যা বন্ধ করতে একুশের আলোর প্রতিষ্ঠা এবং একাত্তরের ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতান্ত্রিক রাষ্ঠ্রহিসেবে ঘোষণা করেন। বার শত মাইল দূরের পাকিস্তানী সেনাশাসক ইয়াহিয়া খান ইসলাম ধর্মের অপব্যাখ্যা করে গোলাম আজমের জামাত এবং মুসলিম লীগের যুদ্ধাপরাধীরা অসহায় ৩০ লক্ষ বাঙালি হত্যায় একসাগর রক্তের বিনিময়ে সর্বকালের বাংলাদেশের আবির্ভাবে অবাক পৃথিবী তাকিয়ে রয়। একুশের আলোতে পৃথিবী যতো আলোকিত হতে লাগলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে ততোধিক অন্ধকারে ইসলাম ধর্মের অপব্যাখ্যায় ধর্মকে জামাত সহ বিভিন্ন ইসলামিক সন্ত্রাসী দল গুলো অস্ত্রের মতো ব্যবহার করে বাঙালি হত্যা চালিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন।
বিগত খালেদা - নিযামির অগোছালো উন্মত্ত জোট সরকারের রাজনীতির অত্যাচারের অমানবিক ৫ পাঁচবছর ছিল পাকিযুগের ইয়াহিয়া রাজত্বের বাংলাদেশী আধুনিক সংস্করণ, যারা আন্তর্জাতিক ভাষা ইনস্টিটিউট বিল্ডিং প্রতিষ্ঠা বন্ধ করে অমর একুশের বাঙালী চৈতন্যের আলোর মালা বন্ধ করে দিয়েছিল। খালেদা জিয়া একজন মুক্তিযোদ্ধার সহধর্মিনী হয়ে কোন সাহসে যুদ্ধাপরাধী মইত্যা রাজাকারকে তার মন্ত্রীসভায় আসন প্রদান করেন। ছিঃ! খালেদা জিয়া ছিঃ! জোট সরকারের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলে মধ্যরাতে পুরুষ পুলিশ বর্বর নির্যাতন চালিয়েছে। ২০০৪ সালের মে মাসে খালেদা জিয়ার জোট সরকার তিন যুব মহিলা লীগ নেত্রীর উপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে প্রমান করল তারা ওই পাকিস্তানী মিলিটারি আর পুলিশেরই উত্তারাধিকারী। ১৯৭৫ সালের পর থেকেই রাজাকার আলবদর ও তাদের দোসররা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বিগত জোট সরকার ও হাওয়া ভবন দলীয় ক্যাডার দিয়ে এক নতুন ধরনের ভেলকি দেখিয়ে গেল।
জনতা আশা করে বিগত জোট সরকারের অস্তিত্ব ধ্বংস হয়ে অমর একুশের আলোর ঝর্ণাধারায় বাংলাদেশে মানবতা আবার ফিরে আসুক। জেনারেল জিয়া বাংলাদেশের রাষ্ঠ্রক্ষমতা হাতে নিয়ে চিনিমিনি খেলেছিল এবং অগ্নিগর্ভ বায়ান্নর একুশের ঐতিহ্য উপেক্ষা করে জিন্দাবাদী পাকিদৈত্য ও জামাত রাজনীতিতে যুদ্ধাপরাধীদের (সাহেব বিবি গোলামের আসনে) প্রতিষ্ঠিত করে দেশের স্বাধীনতার মস্তক বিক্রয় করে গেল কি কারনে? বিগত জোট সরকারের গভীর ষড়যন্ত্রের পরিনামে আজকের রাজনীতির আকাশ ঘন অন্ধকারে ঢাকা। বাংলাদেশ কি জোট সরকারের জমিদারী ছিল? আজ খালেদা জিয়া লৌহকপাটের খাঁচায় বন্দী অথচ মইত্যা রাজাকার দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়ায়। অমর একুশের আলোকে বাংলাদেশ সরকারকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেতে হবে। অমর শহীদ মিনারের দেশে রাজাকার এবং যুদ্ধপরাধীদের কোন জায়গা নেই। অমর একুশ জামাতকে ইসলামের নামে বেলেল্লাপনা ও ভন্ডামিকে প্রশ্রয় দেয়নি। জাতের নামে বা ধর্মের নামে জামাতের ভন্ডামির জুলির বেড়াল বেরিয়ে গিয়ে তাদের ভাব ও মূর্তি আজ কলির সন্ধ্যায় সমাগত।
১৯৫২ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারী সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্ব দলীয় রাষ্ঠ্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের ছাত্র আবদুল মতিন ও গাজীউল হক উভয়ই ১৪৪ ধারা ভাঙ্গার প্রস্তাব করলে চতুর্দিকে গগন বিদারী শ্লোগান ওঠে, “১৪৪ ধারা মানি না।” পাকিস্তান আমলে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্র“য়ারীর পরও ( ১৯৬৯ বা ৭০ সালে লে: জিয়া কি করেছিল?) ইষ্টবেঙ্গল রেজিমেন্টে ”সিপাহী আন্দোলন ” হয় নি কেন? কারন মীরজাফর বা জাতীয় বিশ্বসঘাতক ছিল তৎকালিন মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিন। ১৮৫৭ সালে মঙ্গল পান্ডে সাধারণ সিপাই হয়ে “সিপাহী আন্দোলনে” নেতৃত্ব দিয়ে বৃটিশের ফাঁসিকাষ্ঠে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। বাংলা ভাষা রক্ষার জন্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৫২ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারী মহান ভাষা আন্দোলনে রফিক, সালাম, বরকত সহ অনেক ছাত্র জনতা জীবন দান করেছেন। ৩৫ বছর (১৯৭৩ সালের পর) পর ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকে মজবুত করে প্রতিষ্ঠা করা হয়নি কেন? জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে শহীদ মিনারের স্মৃতির সাগর তীরে দাঁড়িয়ে আজ আমরা সগৌরবে উচ্চারণ করি আমার লেখা কবিতা:
হে আমার বাঙালি ভাইবোন! / একুশের ডাকে আমি আত্মহারা-
আসলো নেমে দুঃখের ছায়া / বাঁচাতে বাংলা ভাষা ভাঙ্গলো শিখল-
ভাষার দেশ গড়তে আত্মবলিদান। / বাংলা বর্ণমালায় প্রাণ গাহে গান।
বাঙালীর মনে ৮ই ফাল্গুন জ্বললো / যারা আসবে না কখনো ফিরে।
শহীদ জননী মা কেঁদে কেঁদে মরে / মায়ের সন্তান এলো না আর ফিরে
শহীদ দিবসে চোখে আসে পানি / এসো স্মরণ করি কুরবানি।
সালাম বরকত রফিক জব্বারের স্মৃতি / এসো স্মরণ করি ভাইদের কুরবানি।
যবে এলো আটই ফাল্গুন / কাঁদে শহীদের মা আর ভাইবোন
আ মরি বাংলাভাষা গো মাগো তোমার বুকে শান্তি চাই।
আসে ফাল্গুন লাগলো যে আগুন / শহীদের অমর বলিদানি
শহীদ দিবসে চোখে আসে পানি / এসো স্মরণ করি কৃুরবানি।
কেউ হিন্দু আর কেউ মুসলমান / কেউ বৌদ্ধ আর কেউ খৃষ্টান।
সবাই মিলে আমরা বাঙালী । / যারা খুন হলো রাজপথে
সে তো বাংলা মায়েরই সন্তান। / শহীদ দিবসে আসে চোখে পানি
এসো স্মরণ করি কুরবানি।
ভাষা আন্দোলনের বীর ভাইরা / ফিরে দেবে শক্তি জাতিকে
দশ দশ দিক করেছে সাড়া / জয় করে জাতি স্বর্গের স্বাধীনতাকে।
যবে এলো যে জীবনের অন্ত / কত সুখ দিলো বলিদানি।
যেমন ছিল যে ওরা দেশপ্রেমি / তেমন ছিল যে ওরা অভিমানি।
শহীদ দিবসে চোখে আসে পানি- এসো স্মরণ করি কুরবানি।
জয় শহীদ মিনার জয় / জয় বাংলা, জয় বাংলা, জয় বাংলার জয়।
(২)
হে মোর চিত্ত গণতীর্থে জাগোরে ধীরে
বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনের শহীদ মিনারের স্মৃতির সাগর তীরে।
বাঙালীর অন্তর জগতে সালাম-জব্বার-রফিকের কবর, কল্পবৃক্ষের তলে-
পঞ্চাশটি বছর ভিজিয়ে রেখেছে কোটি নয়নের জলে।
হেথায় দাঁড়িয়ে দু’বাহু বাড়ায়ে নমি ভাষা সৈনিকদের সুর্বণ জয়ন্তি।
বাংলা ভাষার অর্ঘ্যে পরমানন্দের বন্দন করি তাঁদের নীতি বিশ্বশান্তি।
ব্রহ্মপুত্র পদ্মা মেঘনা নদ-নদী ভরা বাংলাদেশ আমার,
সুরমা কর্ণফুলির বঙ্গোপসাগর
আনন্দ বেদনা সুখ দুঃখের স্মৃতিঘেরা এদেশ আমার।
সালাম বরকত রফিক জব্বারের ইহলোক কেড়ে নিল।
পাকিস্তানের রাক্ষুসী বুলেট রাত্রি অন্ধকার।
চলেছে শহীদদের জীবনদান যজ্ঞ, যুগ হতে যুগান্তর পানে-
শত্র“র সকল বন্ধন মাঝে ধরিয়া সাবধানে বাংলা ভাষার মশাল।
শুনিয়াছি মাতৃভাষার জন্য কত যে শহীদ অকাতরে দান করে গেল,
সাধ অহ্লাদ দুর্লভ মানব জীবন। শহীদ প্রাণ যুদ্ধক্ষেত্রে ও সহিয়াছে;
পলে পলে শক্রর আক্রমন বিষাদের জ্বালা-
নাম না জানা শহীদের অলিখিত স্মৃতিতে বিদ্যমান শহীদ মিনারে।
মসজিদ মন্দিরে যাবার আগে
বাঙালী মন হঠাৎ করে চলে যায় শহীদ মিনারে।
শহীদের আত্মদান দেখিয়াছি আমি, তাই কোরবানির মর্মার্থ
বিশ্লেষণ করতে চাই না আর। অগ্নিগিরী জেগে ওঠে শহীদ মিনারের পাশে।
আটই ফাল্গুনে দেখি কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে আগুন, যেন বাঙালী মনের অগ্নিগর্ভ।
কবি সরহপাদ বাংলাভাষা ও সাহিত্যের আদি পুরুষ চর্যাপদ যুগের
অশোকের শিলালিপির মত ইতিহাস বিজয়ী আমাদের শহীদ মিনার।
শহীদের কাফনের মত পবিত্র জাতীয় পতাকা ও সঙ্গীত আমাদের
বাঙালী অস্তিত্বের সর্বকালের অভিব্যক্তি একমাত্র মাতৃকণ্ঠস্বর।
যে কবিতাখানি সযতেœ করেছি রচনা আজ -
তার মাঝে হেরি আমি একুশের ভাষা সৈনিকদের বায়ান্নোর লাশ।
সালাম জব্বার রফিক বরকত জয় করে গেল পাকসেনার প্রেত
অট্টহাসি।
বাংলা বর্ণমালার ও জাতীয় অস্তিত্বের প্রতিসূত্রে উঠিছে উচ্ছসি।
হে মোর চিত্ত গণতীর্থে জাগোরে ধীরে-
শহীদ মিনারের স্মৃতির সাগরে তীরে।
জয় বাংলা।
কানাডিয়ান প্রবাসী লেখক জনাব এস কে বড়ুয়া আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান লেখক ও বিবিধ গ্রন্থ প্রণেতা।
------------