সরকারের সমালোচনা করা যাবে না !!!!
আব্দুল্লাহ আল মামুন

 

 

বর্তমান সরকারের কাজকর্মে অনেকে অতিতের সামরিক শাষনের ছায়া দেখতে পান। তাদের কথা ও কাজের, প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবায়নের মিল খুইজা পান না অনেকে। অনেকে হয়ত অনেক কিছু না বুইঝাও সমালোচনা করে। যেমন পাটকল বন্ধ করার সমালোচনা করেন , আবার এই পাটকল গুলাই বছরের পর বছর লস দিতে ছিল। অনেকে বলেন পাটকল গুলার ম্যনেজমেন্টে ভাল লোক বসাইয়া ভাল ভাবে চালাইলেই হইত। ভাইরে ভালো লোক কই পাইবেন, আপনি কইবেন ভাল, আরেকজন কইব চোর। আর ভালো লোক পাইলেও সেকি সারাজীবন ই ভালো থাকব, চুরির গন্ধ পাইয়া বদলাইয়া যাইবনা তার নিশ্চয়তা কে দিব। এই সরকার তো আর দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থাকব না। এরা গেলে তো আইব আবার আগের গুলাই। আবার যে আগের মত চলবনা পাটকলগুলা তার কি ঠিক আছে। এত সমালোচনার মাঝে একটা তর্থ্য নির্ভর সমালোচনার দেখলাম না। কেও বলতে পারল না পাটকল বন্ধ করায় কি প্রভাব পরব ইকনমিতে। কেও বলল না পাটজাতদ্রব্যের চাহিদা ভবিষ্যতে বাড়ব না কমব। সবাই বলে ক্ষতি হইতেছে কিন্তূ কত ক্ষতি হইতেছে, তর্থ্য নির্ভর কোন আর্টিকেল নাই।

আবার সরকারও তেমন। কেন বন্ধ করছে তারা ত জানে। আই.এম.এফ. চাপ দিলেতো আর এমনি এমনি দেয় নাই। একটা কারনতো আছে। কারনটা আমার জানলে সরকারের কি ক্ষতি। বরঞ্চ সমালোচনা কমে, জবাবদিহীতা বাড়ে। সবার জন্যই ভালহয়।

পাটকল একটা উদাহরণ মাত্র। সরকারের সব কাজই এই রকম। তাদের চালচলতি দেইখা মনে হয় তারা চায়না কেউ কিছু বুঝুক, জানুক। কেন? কেন এই রাখঢাক? এই লুকোচুরি? সরকার নিজে একদিকে তথ্য চাইপা রাইখা সমালোচনার রাস্তা খুইলা দিতেছে, আবার সমালোচনা বন্ধ করার জন্য শর্ত দিতেছে। আজকের পত্রিকায় দেখলাম

        “সরকার ঘরোয়া রাজনীতি চালু করার কথা ভাবছে কিন্তূ শর্ত হচ্ছে সরকারের সমালোচনা করা যাবে না”

প্রশ্ন হচ্ছে সমালোচনাকে সরকারের এতো ভয় কেন। কি হয় সমালোচনায়? এর ভালটা কি? মন্দটাই বা কি?

সমালোচনার সংগাটা একটু দেখি...  

Criticism in general terms means democratic judgment over the suitability of a subject for the intended purposes, as opposed to the authoritarian command, which is meant as an absolute realization of the authority's will, thus not open for debate.

Constructive criticism is a form of communication in which a person tries to correct the behavior of another in a non-authoritarian way, and is generally, a diplomatic approach about what another person is doing socially incorrect. It is 'constructive' as opposed to a command or an insult and is meant as a peaceful and benevolent approach. Participatory learning in pedagogy is based on these principles of constructive criticism.

Constructive criticism is the process of offering valid and well-reasoned opinions about the work of others with the intention of helping the reader or the artist, rather than creating an oppositional attitude.

Source: Wikipedia

বাংলায় ছোট একটা উদাহরন দেই। এক ক্লাসে এক ছাত্র, সিনিয়ার অভিজ্ঞ এক শিক্ষককে বলল শিক্ষককের ইংরেজি বলা ভালো না। শিক্ষককের জন্য এটা একটা লজ্জা এবং সমালোচনা, যদিও শিক্ষক ভালো কইরা জানে এটা ঠিক না, তার ইংরেজি বলা যথেস্ট ভালো। এখন শিক্ষক দুইটা কাজ করতে পারে। সে সমালোচনাটা accept করতে পারে অথবা নিজেকে defend করতে পারে। নিজেকে defend করলে কি হয়। শিক্ষক বলতে পারে “ আমি বিশ বছর যাবত পড়াই, আমি জানি আমি কি বলতেছি, তুমি ক্লাশে আসার আগে ইংরেজি শিখা আসো”, কথা ঠিক। বিশ বছরে কারো সমস্যা হয় নাই, এখন একজনের সমস্যা হইতেছে, সীমাবদ্ধতাটা হয়ত ছাত্ররই। আবার শিক্ষক সমালোচনাটা accept করতে পারে, বলতে পারে “ আমি চেষ্টা করতেছি ভাল করার, ভবিষ্যতে আরো বেশী চেষ্টা করবো”। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন সমালোচনাটা accept করাটাই নিজের উন্নতির রাস্তা খুইলা দেয়। যে নিজেকে defend করে, সে নিজের উন্নতির রাস্তাটা নিজেই বন্ধ কইরা দেয়।

যখনি কেউ সমালোচনা করে, তার পেছনে সাধারনত একটা কারন থাকে। কারনটা খুইজা দেখেন। সে যদি না বুইঝা সমালোচনা করে তারে বুঝাইয়া দেন। নিজের সীমাবদ্ধতা থাকলে, কেনো ত্রুটি খুইজা পাইলে তা কাটাইয়া উঠেন। মানুষের মুখ চাইপা ধরবেন এইটা কোন ধরনের কথা। আপনাদের ব্যক্তিগত জীবনের সমালোচনা তো কেউ করতেছেনা। আপনি উপদেষ্টা হন আর যাই হন, দেশের উপর আপনার দাবী আমার চেয়ে বেশি না। আমি যদি মনে করি আপনার কোন কাজে আমার ক্ষতি হইতেছে, দেশের ক্ষতি হইতেছে, আমি কেন সেটা প্রকাশ্যে বলতে পারবনা। আর সমালোচনার এতো ভয়ই বা কেনো আপনাদের। আপনারাতো আর নির্বাচনে দাড়াইবেন না যে ভোট কইমা গেলে খালে পরবেন।

এইদেশে জনগন আর আর্মির সম্মিলিত সাপোর্ট নিয়া আপনারা ক্ষমতায় আসছিলেন, সবাই উচ্চ শিক্ষিত প্রতিষ্ঠিত মানুষ। সচ্ছতা, জবাবদীহিতার উদাহরন হইতে পারেন আপনারা। পারতেন নোংরা রাজনীতিবিদদের সামনে একটা মডেল দার করাইতে। তা না কইরা আপনারা পিছনের দিকে টানতেছেন আমাদের, মুখ চাইপা ধরতেছেন। আপনাদের কাজকর্মে সন্দেহের চোখে দেখার জন্য দায়ী তো আপনারাই।

দয়া কইরা আর পিছনের দিকে টাইনেন না। আর আমাগো হাইকোর্ট দেখাইয়েন না। ভাল থাকেন, আমাদেরও ভাল থাকতে দেন। পারলে ভালো কিছু করেন, না পারলে অফ যান।

মামুন_ফ্রীথিঙ্কার                                                                ৩১/০৮/২০০৭