একটি রাজনৈতিক কার্টুন

জাতির ত্রাতা গোলাম আযম

দিলরুবা সুলতানা মাহের

দেশে ভাল ব্যাটসম্যানের দারূন অভাবপশ্চিম বঙ্গ লোকসংখ্যায় আমাদের চেয়ে খাটো, আয়তনেওঅথচ সেখানে সৌরভের মতো ব্যাটসম্যানের জন্ম হয়েছে খেলোয়ার জীবনের শেষপ্রান্তে এসে ডাবল সেঞ্চুরির গৌরব অর্জন করে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেছে সে কয়েকদিন ধরে মনের মধ্যে এই পাষাণভার চেপে বসে ছিলতেরই ডিসেম্বার (২০০৭) টেলিভিশনের রাতের খবরে সুপ্রীম কোর্ট কতৃক হাসিনার হাইকোর্ট প্রদত্ত স্থগিতাদেশ স্থগিতকরণের খবর শুনে ভার অনেকটাই লাঘব হয়ে গেলআর চিন্তা নাই, ঘ্যাগের ওষুধ পাওয়া গেছে ক্রিকেট মাঠে ভাল ব্যাটসম্যান না থাকলেও আদালতে আমাদের একজন তুখোড় ব্যাটসম্যানের জন্ম হয়েছে হাইকোর্ট হতে যে বলই আসুক কিংবা যে এ্যাঙ্গেলেই আসুক- ছক্কা কখনও মিস করেন না তিনি হাইকোর্ট সরকারের বিরুদ্ধে বল করবে? করুক না, সুপ্রীম কোর্টে সৌরভ আছেন না! মুহুর্তে অভার বাউন্ডারী- ছক্কাসাধে কি আর ব্যারিষ্টর রফিক মাস কয়েক আগে খেদোক্তি করেছিলেন - শুড ইট নট কাম ফ্রম দ্য সুপ্রিম কোর্ট, আই উড সে ইট্স আ হাইলি মটিভেটেড ভারডিক্ট ডিফেন্স লইয়ার ব্যারিষ্টর শফিকের ইন্টারভিউ হতে জানা গেল, মহামান্য আদালত এবার কথা বলারই সুযোগ দেননি তাদেরসরকারী উকিলের বক্তব্য শুনে এক তরফাভাবে রায় ঘোষণা করে দিয়েছেনতবে সব বলেই যে বাউন্ডারী মারতে হবে এমন নয়, বলের টেকনিকালিটি বিচার কষতে হবে সুক্ষ্যভাবেযেসব বলে বাউন্ডারী পেটালে বিশেষ মহলের বিরাগভাজন হওয়ার ভয় আছে, সেসব বল মিস করলে দোষ নেই (যেমন তারেক-কোকোদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা)।   

যাক্, হাসিনার ভাগ্য তো মোটামোটি লেখা হয়ে গেলমাস তিনেকের মধ্যেই তিনি যে পাঁচ-সাত বছরের সাজা মাথায় নিয়ে জেলে পার্মানেন্ট হয়ে যাবেন, তা বুঝতে ডক্টর কামালের মতো ভোমা আইনজীবি হওয়ার দরকার পড়ে নাজোট সরকারের পাঁচ বছরে আকাম-কুকাম তিনি তেনি তো আর কম করেননি কিবরিয়া বোমা খেয়ে মরেছে- মরুক নাতার জন্যে সংসদে আলোচনার দাবী তোলার কী দরকার ছিল, দাবী পুরণ না হওয়ার জের ধরে সংসদ বর্জনের কোন্ যুক্তি ছিল? জনসভায় গ্রেনেড ফুটে ডজন দুয়েক লোক মারা গেল, অথচ যার মরার কথা তিনি মরলেন না! কোন মানে হয়? মরলিই না যখন, বেঁচেই যখন গেলি, তখন এত হৈচৈ করে দুনিয়া তোলপাড় করে ভাবমুর্তি বেগমের গায়ে কাঁদা ছিটানোর কী দরকার ছিল? শুধু কি তাই, এই সামান্য ঘটনার জন্যে খালেদা নিজামির দিকে আঙ্গুল তোলা! ফাজলামির একটা লিমিট আছে! এখানেই শেষ নয় ম্যাডাম তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার আগে একটি নির্বাচনী ড্রামার আয়োজন করেছিলেন ড্রামার ব্যবস্থা না করে সাদামাটাভাবে নির্বাচনে গেলে কী পরিণতি হয় ছিয়ানব্বুইর বিখ্যাত শালশা নির্বাচন তার জলন্ত প্রমানঅতঃপর কোন প্রাজ্ঞ রাজনৈতিক নেত্রীই নিজ পার্টিকে সেই পথে ঠেলে দিতে পারেন নাসুতরাং তিনি বিচারপতিদের বয়েস বাড়িয়ে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কে এম হাসানকে প্রধান উপদেষ্টা করার ব্যবস্থা করেছিলেনথানা লেভেলে নির্বাচন অফিসার হিসেবে ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের ক্যাডারদের নিয়োগ দিয়েছিলেনপ্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নাজমূল হুদার জিগিরে দোস্ত্ এম এ আজিজকে বসিয়েছিলেন (হাইকোর্টের সাম্প্রকিতম রায় অনুসারে যা ছিল সরাসরি বেআইনি)সবার উপরে ছিল পরম বিশ্বস্ত ইয়েস্ উদ্দিন স্যারএই রকম একটা জমজমাট ফুলপ্রফ নাটক মঞ্চায়নের বিরুদ্ধে লগি বৈঠার আন্দোলন কোন শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ সমর্থন করতে পারে? কে না জানে যে বাঙালি প্রথাগতভাবে নাটকপ্রিয় জাতি? এই আন্দোলন না হলে আজ বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে যেতে পারতো প্রধানমন্ত্রীর পদ আলো করে থাকতেন প্রিয়দর্শিনী খালেদা জিয়া, হাওয়া ভবনে বসতো জমজমাট বিজিনেসের আসর, ফালু ভাই চাঁদের হাসি ফুলের হাসি নিয়ে হয়তো বা দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীই হয়ে যেতেন এতদিনেনিজামি সাহেবদের হিস্যা এবারে যে ডবল হতো তাতে কোন সন্দেহ নেইএই অমিত সম্ভাবনা নষ্ট হয়েছে হাসিনার অপরিণামদর্শী আন্দোলনের কারনে বস্তুতঃ হাসিনাই ওয়ান-ইলেভেন নামক বহুল কথিত টার্মটির জন্মদাত্রীকোন দেশপ্রেমিক ব্যক্তি বা গোষ্ঠি এই অনাচার মেনে নিতে পারে না বর্তমান সরকার ও সেনাবাহিনী যেহেতু দেশপ্রেমিক, তারাও তা মেনে নিতে পারেনিসুতরাং হাসিনার কারাবাস আটকায় কে? ‘কথায় কথায় আন্দোলন করে মানুষের বাড়া ভাতে ছাই দিস্, যা- এবার জেলের ঘানি টান গিয়ে’- কথাগুলি অবশ্য কেউ প্রকাশ্যে উচ্চারণ করেনিতবে কথাগুলি আমাদের দেশপ্রেমিক সরকারের সুপ্ত মনোভাবরূপে বংলার আকাশে বাতাসে অনুরনিত হচ্ছে অনুক্ষন সরকারের মুখপাত্র মানিকলালমইনুল আজ (১৭-১২-২০০৭) সরাসরি বলে দিয়েছেন- দুবছরের কনভিকশন হলে আইনানুগভাবেই নির্বাচনের যোগ্যতা হরাবেন হাসিনা-খালেদা (পাঠক, লাল শব্দের আভিধানিক অর্থ পুত্র) অন্যভাবে বলা যায়- কাঙ্খিত সাজার মেয়াদ অবশ্যই দুবছরের অধিক হতে হবেহবেই 

হাসিনা তো গেল, কিন্তু খালেদা? ভাইয়ারা জেলে, ম্যাডাম সাবজেলে হাসিনার মতো তাদের বিরুদ্ধে এখনও কোন এয়ারটাইট ফুলপ্রফ মামলা দাড় করানো হয়নি সত্য, তথাপী তাদের ভবিষ্য নিয়ে দারুন উকণ্ঠায় আছেন জাতীয়তাবাদী ভাইয়েরা সংবাদপত্রে নিত্য নুতন স্পেকুলেটিভ নিউজ ছাপা হচ্ছে, বলা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে আওয়ামী আমলে দায়েরকৃত এবং হাইকোর্ট কতৃক খারিজ করা মামলাগুলি আবার নাকি সচল হচ্ছেতবে সবদিক বিবেচনা করলে খালেদার ভবিষ্য নিয়ে তেমন উকণ্ঠার কিছু আছে বলে মনে হয় নানীচের পয়েন্টগুলি বিবেচনা করলে জাতীয়তাবাদী ভাইদের দুর্ভাবনা দূর হয়ে যাবে বলে আশা করিঃ

প্রথমতঃ- গত ৫ বছর নিজামিকে পার্টনার করে বাংলাদেশ শাসন করেছেন ম্যাডামএই সময়কালে দূর্ণীতি ও অনাচারের যে প্লাবন সৃষ্টি হয়েছিল এই ভুভাগে, গত সাড়ে এগার মাসে ইনশাল্লাহ তার স্মৃতি জনমানস হতে অনেকটাই দূরীভুত হয়ে গেছেশুধু তাই নয়, দেশপ্রেমিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার অত্যন্ত সাফল্যজনকভাবে দেশবাসীকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে প্রকৃতপক্ষে গত সরকারের আমলে যেসব দুস্কর্ম সংঘটিত হয়েছে তার জন্যে খালেদানিজামিরা দায়ী নয়, দায়ী আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনাতাই শেখ হাসিনাকেই প্রথমে ধরতে হয়েছে তাদেরশেখ হাসিনার জেল নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে সরকারের প্রথম প্রয়াসের সাফল্যজনক পরিসমাপ্তি ঘটবে বলে আশা করি 

দ্বিতীয়তঃ- গত সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশী দূর্ণীতিগ্রস্থ খাত হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে বিদ্যু খাত যার মন্ত্রী ছিলেন ম্যাডাম স্বয়ংএই খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে বলে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট বেরিয়েছে বহুবারপাঁচ বছরব্যপী এই সীমাহীন অবহেলা ও দূর্ণীতির অবধারিত ফল হিসেবে নিকট অতীতে কানসাট-ডেমরার মতো বিস্ফোরক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল এবং বর্তমানেও একের পর এক জাতীয় গ্রীড ফেল হওয়ার মতো ঘটনা ঘটছেআরও কত বছর এর মাশুল গুনতে হবে ভগা ব্যাটাই তা জানেএসব দূর্ণীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়াতে ম্যাডামের প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবির তালুকদার এবং সচিব নুরুল ইসলামকে চাকুরি খোয়াতে হয়েছিলওয়ান ইলেভেনে ডাবল দেশপ্রেমিক সরকার (দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী + দেশপ্রেমিক তত্ত্বাঃ সরকার) ক্ষমতায় আসার পর এই খাতটিকে এখন পর্য্যন্ত টাচ করা হয়নিদুদকের মহাপ্রতাপশালী কর্ণধার লে.জে মসউদ এ ব্যাপারে একেবারেই নিশ্চুপ যদিও দূর্ণীতির বিরুদ্ধে জিহাদী বক্তৃতা বিলোতে তাকে প্রায়শই অতন্দ্র রাত কাটাতে হয়এ থেকে আশা করা যায় যে ইনশাল্লাহ বিদ্যু খাত বাবদ কোন স্ক্যান্ডালে ম্যাডামকে জড়ানো হবে না 

তৃতীয়তঃ- গ্যাটকো কেলেঙ্কারী নামক একটি ফালতু মামলায় ম্যাডামকে জড়ানো হয়েছে বলে আপাত দৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছেএই মামলা কিছুতেই ম্যাডামের বিরুদ্ধে যাবে না বলে জনগণ বিশ্বাস করে, দেশপ্রেমিক সরকারও বিশ্বাস করে হয়তোএই মামলায় শাস্তি যদি কারও হয় তা হবে মরহুম কর্নেল আকবর হোসেনের (মরনোত্তর শাস্তি), কিংবা তার ছেলের, কিংবা সাইফুর-মান্নান-নিজামি গংদের যারা কাজটি গ্যাটকোকে দেয়ার জন্যে কাগজে কলমে সুপারিশ করেছিলেন মন্ত্রী পরিষদের ক্রয়-কমিটি যদি লিখিতভাবে সুপারিশ করে, প্রধানমন্ত্রী তা উপেক্ষা করবেন কোন্ আইনে? সুতরাং গ্যাটকো মামলা আদৌ কোন মামলা নয়এই মামলায় ম্যাডাম কিংবা কোকোর শাস্তি হওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার সাইফুর-মান্নান-নিজামিরা দেশপ্রেমিক সরকারের ডার্লিং; তারা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভবিষ্য কান্ডারি হিসেবে আবির্ভুত হতে যাচ্ছেন- বিজয় দিবসের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে তার একটি ছোট্ট মহড়া হয়ে গেলযেহেতু তাদেরকে দণ্ডদানের প্রশ্ন আসে না, সুতরাং গ্যাটকো কেসের ভবিষ্য ঝরঝরেবাকী রইল পুরোনো মামলা পুনর্জীবনমাভৈঃএক যুগ আগে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনাকে আদালতে কেইস হিসেবে দাড় করাতে অনেক কাঠখড়ের প্রয়োজনদুএকদিনের বা দুএক মাসের ব্যাপার নয় এটিসুতরাং ওসব মামলা কোর্ট পর্য্যন্ত গড়াতে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা দিয়ে বিস্তর জল গড়িয়ে যাবেদুবছর পর কী হবে তা নিয়ে আগাম ভাবনা সময়ের অপচয় মাত্রসৌরভরা মাঠে থাকতে থাকতে ভালোয় ভালোয় হাসিনা আউট হোক্ 

চতুর্থতঃ- কথিত হয় যে জিয়া পরিবারের উপর রয়েছে সেনাবাহিনীর এক বিশাল অংশের দ্বিধাহীন সমর্থনএই কারণেই গেরিলা কায়দায় শেখ হাসিনার বাসায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে অসম্মানজনকভাবে গ্রেফতার করার পর ম্যাডামের বাসায় অভিযান চালাতে সুদীর্ঘ্য এক মাস অপেক্ষা করতে হয়েছেঅনেক ভেবেচিন্তে অনেক হিসেব কষে তবেই মইনুল হোসেন রোডের অপারেশনটি পরিচালিত হয়, যদিও ইমিডিয়েট পাষ্ট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তারই প্রথম এ্যারেষ্ট হওয়ার কথা ছিল ভাইয়ারা শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দিয়েছেন বলে জনরব রয়েছে, তথাপী ভাইয়া কিংবা ম্যাডামের বিরুদ্ধে কোন কার্য্যকর মামলা ফ্রেম করেনি দেশপ্রেমিক সরকারদুএকটি পেটি চাঁদাবাজির মামলা অবশ্য আই ওয়াশ হিসেবে দায়ের করা হয়েছে, তবে বাংলাদেশের যুবরাজ সামান্য দুচার কোটি টাকার জন্যে কারও উপর জুলুম করবে- এ কথা পাগলেও বিশ্বাস করবে না ইস্কান্দার মামাকে আগেই সসম্মানে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছেএতকিছু নতিজার পর এখনও কি বুঝার বাকী থাকে যে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে যা কিছু করা হচ্ছে বলে দেখানো হচ্ছে, সে সবই আই ওয়াশ

পঞ্চমতঃ- হান্নান-মান্নান কিংবা হাফিজ-দেলোয়ারের দ্বন্দ নিয়ে কেউ আবার ধন্দে পড়বেন না যেন, এগুলো সবই দেশপ্রেমিক সরকার আয়োজিত মজাদার পাতানো খেলা ইনশাল্লাহ সময় হলে সব কিছুই মিটে যাবে, হান্নান-মান্নান ভাই ভাই হয়ে হাসিমুখে কেন্দ্রীয় কার্য্যালয়ে যেয়ে বসবেন টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রাখবেন, হাসিনার শাস্তি কমফার্মড হওয়ার আগ পর্য্যন্ত মাঝে মাঝে ম্যাডামকে নিয়ে দুচার রাউন্ড ক্যারিকেচারের আয়োজন করবে দেশপ্রেমিক সরকারএতে করে জনগণকে বুঝানো সম্ভব হবে যে এই সরকার কতোই না নিরপেক্ষ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে, শাস্তিটা কনফার্মড হয়ে যাওয়ার পর আইনের ফাক-ফোকড় দিয়ে ম্যাডামকে সপুত্রক বের করে নিয়ে আসা কোন ব্যাপার নাআদালত যদি তাদের কোন অপরাধ খুজে না পায় তবে দেশপ্রেমিক সরকার কী করতে পারে? তেনারা তো আর আদালতকে প্রভাবিত করতে পারেন না বিচারপতি রুহুল আমিনকে তারা কি প্রভাবিত করছেন? কভি নেহিভালোয় ভালোয় চললে ইতিমধ্যে জরুরী আইন অনেকটা শিথিল হয়ে যাবে, ম্যাডাম বেরিয়ে আসবেনযদি কৌশলগত কারণে তাকে ছেড়ে দেয়া না যায় এবং সাবজেলেই থাকতে হয়, সেক্ষেত্রেও কোন অসুবিধা নেইজেলে থাকলেও তিনি হাসিনার মতো দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি নন, বরং অন্যায়ভাবে অন্তরীণ করে রাখা রাজবন্দীযে কোন মুহুর্তে মুক্ত জীবনে ফিরে আসার অপশন রয়েছে তারতিনি নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সরাসরি অংশগ্রহণ করতে না পারলেও তার ছদ্ম-নেত্রীত্বে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি সহোদর ভাই জামাতে ইসলামীর সাথে মিলে মিশে ইলেকশন করবে এবং ইনশাল্লাহ জয়ী হবেকারণ শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে দাগী অপরাধী বলে প্রমানিত হয়ে গেছেন, আওয়ামী লীগের ইমেজ ভেঙে চুরমার করে দেয়া হয়েছেআরও ভাল হয় যদি আমুখামুদের নিয়ে ফেরদৌস কোরেশীদের আদলে আরেকটা প্যারালাল ফ্রন্ট গঠন করা যায়হরে দরে একথা নির্দ্ধিধায় বলা যায় যে ইয়াজুদ্দিন সরকার যে মিশন নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদটি হাইজ্যাক করেছিলেন এবং আওয়ামীদের অনমনীয় আন্দোলনের ফলে কাজটি শেষ করে যেতে পারেননি, সেই অসম্পন্ন মিশন সমাপ্ত করা অর্থা জাতীয়তাবাদী শক্তির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার মধ্যেই রয়েছে এই দেশপ্রেমিক সরকারের বহুল আলোচিত সেই এক্সিট রুটটিসুতরাং জাতীয়তাবাদী ভাইদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই, দরকার শুধু কষ্ট করে কয়েকটা মাস ধৈর্য্য ধরা 

শেষতঃ- দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর দেশপ্রেমিক সেনাপ্রধান মাসকয়েক আগে একটি কথা বলে আমাদের দিলে বহু চোট দিয়েছিলেনতিনি আফশোষ করে বলেছিলেন- জাতি এত দিনেও জাতির পিতার সম্মান দিতে পারেনিএ কয় মাসে অবশ্য তার উক্ত বক্তব্যের নিগলিতার্থ আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে সরকারের প্রধান মুখপাত্র (হয়তো বা জামাতেরও) বিজ্ঞ বারিষ্টর মইনুল হোসেন পষ্ট বলে দিয়েছেন, মুজিব হত্যার বিচার কাজ জরুরী-রাষ্ট্রদায়ীত্বে পড়ে নাশেখ মুজিব এমন একটি নাম যা হাজার চেষ্টা করেও ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যায় নাকারণ তার নাম বাংলাদেশের ইতিহাসে না রাখলেও বিশ্বের ইতিহাসে থাকবেই বাংলাদেশের দলিল দস্তাবেজ থেকে মুছে ফেললেও আমেরিকায় রক্ষিত দলিল দস্তাবেজ থেকে মুছে ফেলা যাবে নাযাবে না পাকিস্তানের রেকর্ড থেকে মুছে ফেলা, ইন্ডিয়ার রেকর্ড থেকে মুছে ফেলা, এনসাইক্লোপিডিয়া থেকে মুছে ফেলাযাবেই না যখন, তখন তার নাম ব্যবহার করে অগ্নিগর্ভ আওয়ামী কর্মীদের মনে একটু পানির ছিটা দিলে ক্ষতি কি? আমাদের বিশ্বাস এই কারণেই দেশপ্রেমিক সেনাপ্রধান উক্তিটি করেছিলেন সেনাপ্রধান অবশ্য শেখ মুজিবের সাথে অন্যান্য জাতীয় নেতাদের কথাও বলেছিলেন, তবে কোন্ নেতা কী মর্য্যাদা পাবে তা বিস্তারিত করেননিতার প্রস্তাবের সুত্র ধরে আমাদের একটি নুতন প্রস্তাব আছে; নীচের ক্রমানুসারে জাতীয় নেতাদের মর্য্যাদা ধার্য্য করা হোক্-

মরহুম আব্দুল হামিদ খান ভাসানি------জাতির দাদা

মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান---------জাতির পিতা

অধ্যাপক গোলাম আযম-----------জাতির ত্রাতা

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান------জাতির ভ্রাতা 

গোলাম আযমের নামটি লিষ্টে অন্তর্ভুক্ত করাতে কারও কারও কপাল কুচকে যেতে পারে হয়তো, তবে আমাদের দেশপ্রেমিক সরকার খুশী হবেন আশা করিশেখ মুজিবকে জাতির পিতা বানানো গেল, কনসেশন হিসেবে গোলাম আযমকেও একটা পোষ্ট দেয়া গেলএভাবেই জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠে গভীরভাবে ভেবে দেখুন, গোলাম আযমরা না থাকলে বাংলাদেশ কখনও স্বাধীন হতো না একাত্তরে গোলাম আযমরা আল-বদর রাজাকার বাহিনী গঠন করে পাক-বাহিনীর সহায়তায় গণহত্যা বুদ্ধিজীবি হত্যা করেছিল বলেই সমগ্র বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হতে পেরেছিল গণীমতের মাল হিসেবে বাঙালি রমনীকে পাকি-ক্যাম্পে সরবরাহ করেছিল বলেই আপামর বাঙালি ঘৃনার বিষে জর্জরিত হতে পেরেছিল এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলবাঙালি জাতি কখনও একতাবদ্ধ হতে পেরেছে, ইতিহাসে তার প্রমান নেই একাত্তরে সেই অঘটনটি ঘটেছিল শুধুমাত্র গোলাম আযমদের মতো মহান নেতাদের কল্যানেসুতরাং জাতি হিসেবে তার প্রাপ্য মর্য্যাদা দেয়া কি আমাদের উচি নয়?

এই দৃষ্টিভংগী থেকেই আমাদের মহান নেত্রী গত মেয়াদে বদরপ্রধান নিজামির গাড়ীতে রাষ্ট্রীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলেনআওয়ামী দুবৃত্তসৃষ্ট গন্ডগোলের কারণে তিনি তার মিশন পুরোপুরি শেষ করে যেতে পারেননি

এই দেশপ্রেমিক সরকারের কর্মকান্ডে আমাদের মনে এখন দৃঢ় আশার সঞ্চার হয়েছে যে নেত্রীর আরব্ধ কাজ সমাপ্ত করতেই এই সরকার কৌশলের সাথে অগ্রসর হচ্ছে

অতএব জাতীয়তাবাদী ভ্রাতা ও ভগ্নীগণআপনারা ধৈর্য্য ধরুন, মনজিলে-মকসুদ খুব বেশী একটা দূরে নেই আরঘরে আমাদের পক্ষে আছে মইনুল-মতিনদের দেশপ্রেমিক সরকার, বাইরে আছে বৃটন-আমেরিকা-ভারতের মতো বিগ ব্রাদারদের কৃপাদৃষ্টি।       

শেষ হাসিটি আমরাই হাসব ইনশাল্লাহ

লেবানন- বৈরুত                                                                                            ১৭-১২-২০০৭                                                                                                                     e-mail: [email protected]