ŸSK Haisnar jnY ìB kamna
Pird VHemdঅতি সম্প্রতি বাংলাদেশের ছদ্মবেশী সামরিক শাসকগোষ্ঠী Hfa‡ করেই প্রায় বিনা অভিযোগে শেখ হাসিনাকে আটক করেছে। অনেকের কাছেই বিষয়টি কিছুটা অপ্রত্যাশিত হলেও আমি অবশ্য খুব একটা বিস্মিত হইনি। বিস্মিত না হওয়ার কারণ এই যে, আমি খুব ভাল করেই জানি এই সামরিক গোষ্ঠী যে অশুভ উদ্দেশ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সেই উদ্দেশ্যের সবচেয়ে কঠিন বাধা হচ্ছে শেখ হাসিনা। সামরিক গোষ্ঠীও সেটা খুব ভাল করেই জানতো। আর জানতো বলেই খুব বোধগম্য কারনেই তারা কিছুদিন আগে শেখ হাসিনার দেশে ফেরার সময় বাধা দিতে যেয়ে যে প্রেসনোট জারি করেছিল তাতে তাকে দেশ ও জনগণের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জ্বনক ব্যক্তি হিসাবে চিহ্নিত করেছিল। পাঠককে এখানে অবশ্য দেশ ও জাতির জায়গায় সামরিক ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীকে বুঝে নিতে হবে। সামরিক ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর জন্য তিনি যে বিপজ্জ্বনক ছিলেন তার প্রমাণও তিনি দিয়েছিলেন এই গোষ্ঠীর সাথে প্রাথমিক সেই লড়াইয়ে বিজয়ী হয়ে।
শুরুর দিকে শেখ হাসিনা তার প্রাজ্ঞতা ও দূরদর্শিতার অভাবে ঠিকমত বুঝে উঠতে পারেননি যে এটা প্রকৃতপক্ষে সামরিক শাসন। ফলে, বলা চলে যে, অনেকটা নিজ থেকেই আগ বাড়িয়ে এই সরকারের প্রতি বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সাহায্যের হাত। অবশ্য এ ব্যাপারে একা শেখ হাসিনাকে দোষ দিলে চলবে না। অনেক জ্ঞানী গুণী মহা পন্ডিত ব্যক্তিরাও ঠিকমতো ঠাহর করে উঠতে পারেননি এদের আসল পরিচয়। এতো সুচতুর ছদ্মবেশ ধারণ করে এই সামরিক গোষ্ঠী ক্ষমতার মসনদে গিয়ে বসেছিল যে এ ব্যাপারে তাদের অসাধারণ প্রতিভার কারণে অস্কার টস্কার দিয়ে দিলেও খুব একটা মন্দ হয় না।
প্রথম প্রথম বিএনপির দিকে কামান দাগিয়ে লোকজনের চোখে ধুলো দেওয়ার আসল কাজটাও বেশ ভালভাবেই সেরে নিয়েছিল অতি ধূর্ত এই গোষ্ঠী। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই অবশ্য সেই কামানের মুখ ঘুরে গিয়েছিল তাদের আসল টার্গেট আওয়ামী লীগের দিকে। বিএনপিতো আর তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। বরং সামরিক বাহিনীর সিভিল প্রতিভু হিসাবে বিএনপি কাজ করে আসছে তার জন্ম লগ্ন থেকেই। কিন্তু গত পাঁচ বছরে বিএনপির এমনই পচন ঘটেছে যে র্দ্গুন্ধযুক্ত এই বিএনপিকে সামনে রেখে কাজ চালানো বড় কঠিন হয়ে পড়েছে তাদেরর জন্য। এই সরকার যে নতুন কিংস পার্টি গড়ে তুলতে চাইছে সেটা যে বিএনপির আদলেই গড়ে উঠবে সেটা প্রায় নিশ্চিত করেই বলে দেওয়া যায়। মান্নান ভুঁইয়া, খোকাবাবু, ফেরদৌস কোরেশীদের মত পুত পবিত্র ব্যক্তিরা অপেক্ষা করে বসে আছেন নতুন বিএনপি গড়ে তুলে নতুন বাংলাদেশ গড়ার জিগির তোলার জন্য। খালেদা জিয়া আপাতত তার পাহাড় প্রমাণ অপরাধের নিচে চাপা পড়ে বসে আছে। তার বা পুরনো বিএনপির পক্ষে আর কোনভাবেই সম্ভব নয় এদের জন্য প্রতিপক্ষ হয়ে দাড়ানোর। কিন্তু শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে সে কথা সমানভাবে প্রযোজ্য নয়।
সেই পাকিস্তান আমল থেকেই বার বার সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে আওয়ামী লীগ। তার সর্বশেষ প্রমাণ হচ্ছে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগের মাটি কামড়ে মরণপণ লড়াই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই লড়াইয়ে আত্মাহুতি দিয়েছে আওয়ামী লীগের অসংখ্য ত্যাগী কর্মী। যদিও নেতৃত্বের অপরিপক্কতার কারনে পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের কর্মীদের এই ত্যাগের ফল ভোগ করেছে বিএনপি। আওয়ামী লীগের এই ঐতিহাসিক সংগ্রামী মানসিকতাই যে কোন সামরিক শাসকের মাথা ব্যথার জন্য যথেষ্ট।
বর্তমান ছদ্মবেশী সামরিক শাসকেরাও তার ব্যতিক্রম নয়। তাদেরর বিপক্ষে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আওয়ামী লীগই যে দাড়িয়ে যাবে সে কথা তারা খুব ভাল করেই জানে। আর সে জন্যেই আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে তারা বেছে নিয়েছে শেখ হাসিনাকে। বহু দুর্যোগে, ভয়াবহ ক্রান্তিকালে শেখ হাসিনাই তার শ্রম দিয়ে, মেধা দিয়ে, ভালবাসা দিয়ে টিকিযে রেখেছেন আওয়ামী লীগকে। একজন নেতা তার অনুসারীদের কাছে কতখানি প্রিয় হতে পারেন তার প্রমাণ খুব ভালভাবেই পাওয়া গেছে হাসিনার গ্রেপ্তারের পর অগুন্তি মানুষের আহাজারি আর কান্নার মধ্য দিয়ে। যারা কথায় কথায় বিনা কারণে হাসিনার সমালোচনা করতে পছন্দ করেন তারা এ বিষয়ে খোলা মন নিয়ে গভীর গবেষণা করে দেখতে পারেন। অসংখ্য মানুষের ভালবাসা শুধুমাত্র বাবার পরিচয়ে পাওয়া যায় না। নিজেরও কিছু যোগ্যতা থাকতে হয়। মানবীয় সব সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও শেখ হাসিনা ঠিকই অর্জন করে নিয়েছেন মানুষের সেই ভালবাসাটুকু। এটাইতো নেতার আসল গুন।
অসংখ্য মানুষের অশ্রু মাড়িয়ে শেখ হাসিনা যে বন্দীত্ব বরণ করেছেন তা যে স্বল্পস্থায়ী হবে সে কথা না বললেও চলে। কোটি কোটি মানুষের ভালবাসা কখনো বৃথা যায় না, যেতে পারে না। লাখো মানুষের আনন্দ অSã›তে সিক্ত হয়ে এই সেদিন শেখ হাসিনা লড়াই করে যেভাবে দেশে ফিরে এসেছিলেন, আবারো সেইভাবে ফিরে আসুন মাটি আর মানুষের কাছে। সেই শুভ কামনা রইল।
সামরিক বুটের নিচে আবারো চাপা পড়া দেশের এই প্রচন্ড দুঃসময়ে শেখ হাসিনাকে যে বড্ড বেশি প্রয়োজন আমাদের।
মায়ামি, ফ্লোরিডা
f[email protected]