মতি ভাই ও দেশের সাম্প্রতিক অনুভূতিঘুম থেকে উঠেই অফুরন্ত অবসর। ছেলে স্কুলে চলে গেছে আর আমি ইন্টারনেটে কাজ করছি। এই আমার চাকরি, এই আমার কাজ । কিন্তু হলে হবে কি? ছোট একটা যন্ত্রের কল্যানে সারা বিশ্ব যে আমার হাতের মুঠোয়। তাই হুট হুট করে চলে যেতে হয় বাংলা ওয়েব সাইট গুলোতে । মুক্তমনা সম্প্রতি আমার তীর্থস্থানে পরিনত হয়েছে। সেখানেই পড়লাম অভিজিৎ রায় আর আরিফ জেবতিকের লেখা দু’টো। মতি ভাইকে যে চমৎকার বাঁশগুলো আপনারা গিফট করেছেন সেজন্য আপনাদের দু’জনকেই আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি আর সেই সাথে একটা নিগুঢ় সত্য কথা বলে রাখি “ভাই অভিজিৎ আর জেবতিক, বাংলাদেশে ভাত করে খেতে হয় না তো তাই প্রাণে বেঁচে গেছেন আপনারা। দেশে বসে এমন লেখা লিখতেন, দেখতাম বুকে কত জোর। আর ইন্টানেটের কল্যানে তো ধরেন, সবই আপনাদের হাতের মুঠোয়। ইচ্ছে হলো বাংলা টাইপ করে মেইল সেন্ড করে দিলেন। জীবনের হিসেব বাংলাদেশে অত সোজা না। মতিভাইদের মতো ছদ্মবেশী প্রগতিশীলদের সাথে কাজ করে দেখেছেন কখনো?”
আমাদের মতো বাংলাদেশের ভাত পেটে হজম না করতে না পারার কারনে বিদেশে এসে পড়ে থাকতেন তাহলে হয়তো বুঝতেন, মতি ভাইরা আজকের নিজামীদের চেয়েও নষ্ট মানুষ। জানেন তো, কথায় আছে, চিহ্নিত শয়তান ছদ্মবেশী শয়তানদের চেয়ে ভালো। মনে রাখবেন, মতি ভাইদের টিকে থাকতে হয় যুগে যুগে, কালে কালে। সুতরাং হাত কচলানো ছাড়া মতি ভাইদের আর পথ কি বলেন? কাটুনিষ্ট কাটুর্ন একে যত অপরাধ করেছে তার চেয়ে বেশী অপরাধ করেছে মতিভাই এর পত্রিকায় কাজ করে মতিভাই এর চরিত্র না জেনে। আরিফের কি জানা উচিত ছিলো না যে, এই মতিভাই একদিন একতার সম্পাদক ছিলেন। সেই মতিভাই আজকে বিশাল(?) পত্রিকার মালিক। মাত্র ৬০ লাখ টাকার এপার্টমেন্টে থাকেন। আরিফ জানে না কমিউনিস্ট পার্টির কর্মী যখন মৌলবাদের গান গায় তখন কত কুৎসিত হয় সেই ধ্বনি ? ভাই আরিফ, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ , আপনার সামান্য ভুলের কারনে আজকে আমরা আরো একবার জানতে পারলাম যে আসলে আপনি আঘাত হেনেছেন দেশের নতুন জামাতী হায়েনাদের অনুভুতিতে। কারন রমজানের এই মাসে রোজা রেখে সকাল বেলা অন্তত এটুকু বিশ্বাস করবো না যে, মোহাম্মদ সাঃ এর অনুভূতি এত তুচ্ছ আর ভংগুর যে এক কাটুর্নের কল্যানে তা গুড়িয়ে যাবে। বরং মেধা আর সাহসের অভাবে যে মতি ভাইরা আজকে দেশকে প্রতিমুহুর্তে বেচা বিক্রি করছে আপনি আঘাত হেনেছেন তাদের এই টলমলে বা টালমাটাল মানসিকতায়। নইলে কি আর একটি দেশের তথ্য উপদেষ্টা শুধু কিছু ধর্মীয়নেতাদের ভয়ে ইদুরের গর্তে লুকানোর চেষ্ট করেন? কি আর করা ভাই, ইতিহাস থেকে শিক্ষা পেতে হলে নাকি প্রাণ দিতে হয়। তাহলে তাই হোক। দেশে বসে তো আর এই লেখা পত্রিকায় পোষ্ট করতে পারতাম না। আবার প্রথম আলোতে কাজ করলে তো ধরেন মনে মনেও কথাগুলো বলতে পারতাম না, তাহলেও হয়তো মতি ভাই আমার মানসিকতাকে বুঝে ফেলে আমাকে ফায়ার করে দিতেন। যাক সেসব কথা, এই ফাকে সালাম জানাই কানাডার ইমিগ্রেশনকে তারা হয়তো আমার নাগরিকত্ব এই ইস্যুতে বাতিল করবে না।
দেশে এখন সব শালারাই নাকি মতি ভাই এর লাইনের বিপ্লবী। তবে আর ভাবনা কি। জয় হোক মুক্তমনার আর দেশ থেকে মুক্ত পৃথিবীতে বেরিয়ে এসে কথা বলুক অভিজিৎ আর জেবতিকেরা।
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০০৭ টরোন্টো, কানাডা ।