গ্রেফতার আরিফ, চাকুরিচ্যুত সুমন্ত আসলাম, আর শেষ রাতে মতি ভাইয়ের বিড়াল মারা
আরিফ জেবতিকএক.
প্রথম আলো'তে নাকি রাসুল (সা:) এর অবমাননা করা হয়েছে। বিদ্রুপ ম্যাগাজিন আলপিনে একটা কার্টুনের মাধ্যমে এই কাজটি করা হয়েছে। আলপিনের গতকালের সংখ্যা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে,কার্টুনিস্ট আরিফকে গ্রেফতার করা হয়েছে,আলপিন ম্যাগাজিনের সম্পাদক আর হালের জনপ্রিয় লেখক সুমন্ত আসলামকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। সরকার সকল ধর্মীয় নেতাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতিকে শান্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। মারহাবা। বিরাট কর্মতৎপরতা।দুই.
কার্টুনটি আমি কালকেও দেখেছি। আফসোস, আমার ঈমানী শক্তি সত্যিই দুর্বল, কার্টুনটি ওভাবে খেয়াল করে দেখি নি। আজকের হইচইয়ের পরে আবার কার্টুনটি পড়ে দেখলাম।এখানে পাঠকের সাথে শেয়ার করি:
কার্টুনে দেখানো হয়েছে একজন বয়ষ্ক ভদ্রলোক একটি ছেলের সাথে রাস্তায় কথা বলছেন। ছেলেটি টোকাই ধরনের, তার হাতে একটা ছোট্ট বিড়াল।
কথোপকথন নিম্নরূপ:এই ছেলে তোমার নাম কী?
-আমার নাম বাবু
নাম বলার আগে মোহাম্মদ বলতে হয়।
তোমার বাবার নাম কী?
-মোহাম্মদ আবু
তা তোমার কোলে এটা কী?
- মোহাম্মদ বিড়াল
তিন.
বিষয়টি তুচ্ছই মনে হচ্ছে আমার কাছে। একজন প্রদায়ক (যারা পত্রিকার স্টাফ নন)একটি ছোট্ট কার্টুন একেছেন পৃষ্ঠার এক কোনে সেটা নিয়ে এই তুমুল হইচই আসলেই আমাদের জ্ঞানবুদ্ধির সীমাবদ্ধতা, আমাদের উগ্রতা, পরমতঅসহিষ্ঞুতা এই বিষয়গুলোকে সামনে নিয়ে আসে।চার.
প্রথম আলো'র আলপিন ম্যাগাজিনটি একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ হিসেবে নতুন কনসেপ্ট হিসেবে বের হয়েছিল। এই কনসেপ্টের গোড়া থেকে চ্যালেঞ্জটি হাতে নিয়েছিলাম আমি, সুমন্ত আর রবি। নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আনিসুল হক। আমাদের প্রচন্ড খাটাখাটনি গিয়েছিল, তখন ইন্টারনেট এতো জনপ্রিয় বা সহজলভ্য না, আমরা তাই ঢাকা আর কলকাতাতে পাওয়া যায় এমন কয়েকশন জোকসের বই প্রায় হাফিজী স্টাইলে মুখস্ত করে ফেলেছিলাম, বিভিন্ন দেশের ম্যাগাজিনগুলোর গেটআপ মেকাপ নিয়ে স্টাডি করেছি, আর এই সব না না বিতংয়ের পর আলপিন এর প্রকাশ। কোন দৈনিকের কোন সাপ্লিমেন্ট আজতক সেই জনপ্রিয়তাকে স্পর্শ করতে পারে নি।পাচঁ
সুমন্ত অত্যন্ত ধুরন্ধর চরিত্রের মানুষ। বিভিন্ন সময়ে শুধুমাত্র ধুরন্ধর কাজকর্ম করে, হ্যাংলার মতো চামচামি করে,আর প্রচন্ড পরিশ্রম করে সে এতোদূর নিজেকে তুলে এনেছে।কিন্তু মতিউর রহমান আরো বড়ো ধুরন্ধর। বিভিন্ন সময় আলপিনের বিভিন্ন ম্যাটার নিয়ে, বিল নিয়ে যে দুষ্কর্ম গুলো হয়েছে সেগুলোকে তিনি ইগনোর করে সুমন্তকে সাপোর্ট করে গেছেন।
কিন্তু আজ বড়ো অসময়ে নিজেকে বাচাঁতে সেই সুমন্ত আসলামের চাকরিটা উনি খেয়ে ফেললেন।
মুক্তবুদ্ধি চর্চা,মুক্তচিন্তা চর্চা,বাক স্বাধীনতা,এই সব বলে গলা ফাটানো বুদ্ধিজীবিদের চরিত্র আরেকবার দেখলাম মতি ভাইয়ের এই কাজের মাধ্যমে।
সব শালাই ভদ্রলোক।
সব শালাই আবার গোপনে বউ পিটায়।