দ্রোহের প্রতীক অধ্যাপক ড.আহমদ শরীফ এর ৯৮ তম জন্মদিনে শ্রদ্বাঞ্জলি
নুরুজ্জামান মানিক
জ্ঞানের গভীরতায়,মৌলিক চিন্তায়, মুক্তবুদ্ধির চর্চায় এবং সর্বোপরি মানবতাবাদ প্রচারে নিষ্ঠাবান শিক্ষাবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড.আহমদ শরীফ (জন্ম ১৩ ফেব্রু ,১৯২১ ; মৃত্যু ফেব্রু ২৪, ১৯৯৯) বাংলাদেশের এক উজ্জ্বল জোতিষ্ক দ্রোহ ও প্রথাবিরোধিতা যার মানসের আন্তর্গত বৈশিষ্ট্য ।
সমাজের সকল রকম অসঙ্গতি, অন্যায়-অনাচার-বৈষম্য, ধর্মান্ধতা-মতান্ধতা-সাম্প্রদায়িকতা, শোষন-পীড়ন-দুঃশাসন এবং বিদেশী খবরদারী ও লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক ওবুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনে প্রতিবাদ ও দ্রোহের প্রতিক । তার শত্রু-মিত্র সকলেই ঐকমত হল , তিনি সাহসী মানুষ ছিলেন । তার এই দ্রোহ আর সাহসের উৎস কি ? তারই ভাষায় :‘ আমার সাহসের উৎস হচেছ হঠকারিতা,অবিমৃশ্যকারিতা ,সংস্কৃত শব্দ। আমি ভেবে চিনতে কোনো কাজ করতে পারিনা। আমি যেটা মনে করি উচিৎ, সেটা উচিত।’ (দ্র, দৈনিক সংবাদ,২২ ফেব্রুয়ারী ২০০৬) তার এই স্বীকারুক্তির সাথে দ্বিমত না করেও আমরা বলতে পারি তার সাহস আর দ্রোহের মুলে ছিল তার নিখাদ মানবপ্রেম এবং দেশপ্রেম । তার এই জেদীমনার জন্য একদিকে তিনি চিহি¡ত হয়েছেন ‘সাংস্কৃতিক জগতের মাওলানা ভাসানী’, ‘রেনেসাসের প্রতিনিধি ’অন্যদিকে বুদ্ধিজীবিদের বর্ণানায় বিতির্কত আর প্রতিক্রিয়াশীল মোল্লাদের কাছে ‘মুরতাদ ’ ( ২১ অক্টোবর ১৯৯২ তারিখে স্বদেশ চিন্তা সংঘের সেমিনারে ইসলাম ও মুসলমান সম্পর্কে মত প্রকাশের জন্য তিনি মোল্লাদের দ্বারা মুরতাদ আখ্যায়িত হন , দেখুন ইনকিলাব ২৪ অক্টোবর ১৯৯২) ।
অধ্যাপক আহমদ শরীফ অভিমানী ও জেদী ছিলেন নিঃসন্দেহে তবে সেসাথে ছিলেন নির্মোহ ব্যক্তিত্ব । একালে এমন মানুষ সহজে মেলে না।
বাংলাদেশের এই দারুন সময়ে (!) we missed him very much.