ব্রনো'র সমকালিন আরো যাঁদের পুড়িয়ে মারা হয়েছিল
নুরুজ্জামান মানিক
জিঅরদানো ব্রুনো কে ভিন্নমত পোষনের দায়ে রোমে দন্ডাজ্ঞা দেবার পর "কাম্পো দ্য ফিওরি" নামক দহনস্থলীতে পুড়িয়ে মারা হয় ১৬০০ সালে। এটা আমরা কমবেশী সবাই জানি। তিনি বিখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন ; বিধায় তাকে নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হয়েছি । বাংলা ভাষায়ও লেখার কমতি নেই । বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ রাবি'র অধ্যাপক শহীদুল ইসলামও লিখেছেন তার আত্বত্যাগ নিয়ে । স্যারের লেখাটা মুক্তমনা বই স্বতন্ত্র ভাবনায় সন্নিবেশিত হয়েছে। অনলাইনে পড়া যাবে এখান থেকে।
ব্রুনোর ঐ যুগে ইউরোপে এরকম অনেক হত্যাকান্ড ঘটেছিল ,যাদের সবার কথা ইতিহাসে পাওয়া যায়না। যতদুর জানা যায়, ১৬১৯ সালে তুলুজে লুচিলিও ভানিনি নাস্তিক হিসেবে দোষী সাব্যস্ত হন; তার জিঁহবা ছুড়ে ফেলা হয় এবং তাকে পুড়িয়ে মারা হয় ।
প্রথম এলিজাবেথ ও জেমস (রাজ ১৬০৩-১৬২৫) এর শাসনকালে ইংল্যান্ড রোমান ইনকুইজিশনের চেয়ে
পিছিয়ে ছিল না কিন্তু যাদের বলি দেয়া হয়েছিল তারা অখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন বলে ঐ দেশের ধর্মীয় উন্মাদনার কথা ভুলে যাওয়া হয়েছে। অবশ্য কবি মার্লো (১৫৬৪-১৫৯৩) যদি শূড়িখানায় নোংরা কলহে নিহত না হতেন তবে ইংল্যান্ড তাকে পুড়িয়ে মেরে ইতালির মত গৌরব (!) লাভ করতে পারত, কারণ মার্লোর খ্যাতি ব্রুনোর চেয়ে কম ছিল না । উল্লেখ্য , তিনি নাস্তিকতার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন কিন্তু বিচার চলাকালেই তিনি নিহত হন । নাট্যকার টমাস কিড (১৫৫৮-১৫৯৪) কেও নিদারুন শাস্তি দেয়া হয়েছিল। স্যার ওয়াল্টার র্যালে (১৫৫৪-১৬১৮) এর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল কিন্তু তিনি দোষী সাব্যস্ত হননি বলে রেহাই পান । অন্যরা এত সৌভাগ্যবান ছিলেন না । এলিজাবেথের রাজত্বকালে নরউইচে ফ্রান্সিস কেট (যিনি কেমব্রিজে করপাস ক্রিস্টির ফেলো ) সহ তিন/চার জনকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল।
প্রথম জেমস এর আদেশে বার্থৌলোমিউ লিগেট (১৫৭৫-১৬১১) কে কিছুদিন কারারুদ্ধ রেখে তারপর স্মিথফিলদে পুড়িয়ে মারা হয় । মাত্র এক মাস পরে ওয়াইটম্যানকে কভেন্ট্রির বিশপ লিচফিলডে পুড়িয়ে মারা হয়।(রচনাকাল ২০০৮-০৪-১৭)
Ref: J B Buri, A History of Freedom of Thought, 1914.