স্বাধীনতার নেপথ্যের ইতিহাসঃ আমরা যাদের ভুলে গেছি -৩
নুরুজ্জামান মানিক
(যারা মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন, মেজর জিয়া'র ২৬ ও ২৭ মার্চ ১৯৭১ সালের ঘোষনার প্রেক্ষিতে বাঙ্গালী না থুক্কু বাংলাদেশী আমজনতা মুত্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তারা এই লেখা পড়লে তাদের মুল্যবান সময় নষ্ট হতে পারে)
৫) ১৫ই সেপ্টেম্বর ১৯৬৯। ঢাবি'র মধুর কেন্টিনে "সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ " এর সভা বসেছে আসন্ন শিক্ষা দিবস (১৭ মার্চ ) যৌথভাবে পালনের জন্য কর্মসুচী প্রণয়নের নিমিত্তে । সভার উপস্থিত সদস্যদের কানে হঠাত্ বেজে উঠল একজন ছাত্র কর্তৃক উচারিত নতুন একটি স্লোগান । ওই ছাত্রটির পেছনে থাকা আরেকজন ছাত্র একাই তার প্রত্যত্তর করল । ওই দু'জন এবার একসাথে বারবার উচারন করতে থাকল ওই বিশেষ স্লোগানটি কিছুক্ষন পর তারা বিরতি দেয় । ওই দু'জন ছাত্রের প্রথম জন হলেন তত্কালীন ঢাবি'র রাস্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আফতাব আহমেদ আর দ্বিতীয় জন হলেন চিশতী
হেলালুর রহমান (টিকা দেখুন)
যে স্লোগানটি তারা দিয়েছিলেন তা হল "জয় বাংলা" । পরে এ স্লোগান ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরাও ধরতে শুরু করে তাদের তাত্ত্বিক গুরু সিরাজুল আলম খান (কাপালিক ) এর নেতৃত্বে । এই স্লোগানই সময়ের প্রেক্ষাপটে বাঙলীর জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের প্রতীকে পরিনত হয়। উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭০ সালের ৭ই জুন রেসকোর্স ময়দানের বিশাল জনসভায় প্রথম উচারন করেন।
প্রসঙ্গত আরো উল্লেখ্য, সর্বদলীয় সভা মিছিলে সর্বদা স্লোগানের প্রতিযোগিতা হত। তো "জয় বাংলা "স্লোগানের বিপরীতে ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীরা বের করে "জয় সর্বহারা" কিন্তু তাদের স্লোগানটি হালে পানি পায়নি ।
টিকা : চিশতী হেলালুর রহমান বগুরা থেকে ঢাবি এ ভর্তি হন । ৬৯ সালে তিনি ছিলেন ২য় বর্ষের ছাত্র । একই সময় তিনি অধুনালুপ্ত দৈনিক আজাদ পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন । ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ এর "অপেরেশন
সার্চলাইট" চলাকালীন পাক হানাদার বাহিনী তাকে ইকবাল (বর্তমান সার্জেন্ট জহুরুল হক ) হলে হত্যা করে।