বিচারপতি তোমার বিচার করবে কারা
সগীর আলী খাঁন
ফ্রান্সের একটি বেসরকারী যাদুঘরে (গিমে যাদুঘর) বাংলাদেশের প্রত্নসম্পদ সরকারীভাবে পাচার করার সময় দু’টি বিষ্ণুমুর্তি খোয়া যাওয়া নিয়ে মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। এমনি তোলপাড় যে তার তোড়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সংক্রান্ত চিল্লাচিল্লি প্রায় ঢাকা পড়ে গেছে। আশা করা যায় যে এই টেম্পো আর কিছুদিন ধরে রাখা গেলে নিজামি-মুজাহিদিদের বিচারের বিষয়টি জনগণের স্মৃতি হতে বিলুপ্ত হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয়, সরকার বাহাদুর এই চুরির ঘটনার সুরাহা করতে তাৎক্ষনিকভাবে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিশন গঠন করেছেন। সরকারী তদন্ত কমিশন সাধারণতঃ গঠিত হয় স্পর্শকাতর কোন ইস্যুকে ধামাচাপা দেয়ার জন্যে। অতীতে বিভিন্ন বিষয়ে গঠিত প্রায় ৯৯% তদন্ত কমিশনের ফলাফল তাই বলে। মুর্তিচুরির কমিশন ভিন্নরূপ ফল বয়ে আনলে তা হবে অস্বাভাবিক।
বিষ্ণুমুর্তি দু’টি খোয়া যাওয়ার ঘটনা পুর্বাপর বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে বিগত জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশ সরকার ফ্রান্সের একটি বেসরকারী যাদুঘরের সঙ্গে মুর্তি পাচারসংক্রান্ত চুক্তি করে। জোট সরকারের অনেক কার্য্যক্রমই অন্যায্য হিসেবে বাতিল হয়েছে ইতিমধ্যে, তবে মুর্তি পাচারসংক্রান্ত চুক্তিটি বহাল রাখা হয়- কারণ গিমে যাদুঘরকে মুর্তি দিলে নাকি ফ্রান্সের সঙ্গে বাংলাদেশের ভ্রাতৃত্ব বন্ধন পোক্ত হবে, দেশের ভাবমুর্তি উজ্জ্বল হবে। সুতরাং সরকার বাহাদুর যখন মুর্তিগুলি পাচারকাজের গ্রাউন্ডওয়ার্ক নিয়ে ব্যতিব্যস্ত ছিলেন, তখন কিছু বেরসিক মুর্তিপ্রেমিক হাইকোর্টে কেস ঠুকে দেয়। হাইকোর্ট-সুপ্রীমকোর্টে কেস আর মুর্তি পাচারকাজ মোটামোটি প্যারালালভাবে চলতে থাকে, সমসাময়িক সংবাদপত্র হতে যার তথ্যবিবরণী নীম্নে প্রদত্ত হলো-
১- আইয়ুব কাদরী সাহেবের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় যখন আহারনিদ্রা ত্যাগ করে মুর্তি পাচারকাজ নিয়ে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে, তখন মুর্তিপ্রেমী একটি কুচক্রী মহল গত ১৭ই সেপ্টেম্বার (২০০৭) হাইকোর্টে এর বিরুদ্ধে রিট করে। তাদের যুক্তি ছিল- “কোন প্রত্নসম্পদ বিদেশে পাঠাতে হলে প্রত্যেকটির ইনসুরেন্স থাকতে হবে, ছবি থাকতে হবে, মার্কিং থাকতে হবে, ভিডিও করে রাখতে হবে। এছাড়া যারা পাঠাবে তাদের লাইসেন্স থাকতে হবে। ..সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় যেমন এগুলি পাঠানোর উপযুক্ত কতৃপক্ষ নয় তেমনি ফ্রান্স সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের এ নিয়ে কোন চুক্তিও হয়নি। ..অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় দেশের মূল্যবান প্রত্নসম্পদ পাঠানো হচ্ছে এবং এগুলি ফেরৎ আসবে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ইত্যাদি ইত্যাদি।” বুঝুন ঠেলা, মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশী, আইয়ুব কাদরীদের চেয়ে কোথাকার কোন আমিরুল ইসলাম (মুর্তিপ্রেমীদের আইনজীবি) তার দরদ বেশী!
২- শুনানি শেষে বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি ফরিদ হোসেনের বেঞ্চ প্রত্নসম্পদ বিদেশে না পাঠানোর জন্যে সরকারকে নির্দ্দেশ দেয় ও রুল জারি করে।
৩- হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে সরকার সুপ্রীম কোর্টে আবেদন করে এবং সুপ্রীম কোর্ট এ্যাজ ইউজুয়াল হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দেয়। এই সুযোগে সরকার গত ৩০শে নভেম্বার শুক্রবার (ছুটির দিনে) প্রথম চালানটি ফ্রান্সে পাচার করতে সমর্থ হয়। শোকর আলহামদুলিল্লাহ।
৪- এর পরেও মুর্তি প্রেমীদের উদ্যোগ থেমে থাকেনি। রাস্তায় মানব বন্ধনের মতো জরুরী আইন ভঙ্গকারী কর্মসূচীর পাশাপাশি তারা ২২শে নভেম্বার আবার নিম্ন আদালতে দেওয়ানী মামলা দায়ের করে। নিম্ন আদালতকে সরকার যেহেতু সম্পূর্ণ স্বাধীনতা গ্র্যান্ট করেছে সুতরাং বিজ্ঞ আদালত সরকারবিরোধী এই মামলা গ্রহণ না করে আবেদনকারীদের মুখে ফেরৎ দেয়। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কি অপুর্ব নমুনা!
৫- নাছোড়বান্দা মুর্তিপ্রেমীরা নিম্ন আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে পুনরায় হাইকোর্টে রিভিশন মামলা দায়ের করে। বিচারপতি এস কে সিনহা এবং বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির পুর্ণাঙ্গ শুনানী শেষে ৬ই ডিসেম্বার নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে রুল জারী করেন এবং মুর্তি পাচারকাজের উপর স্থিতাবস্থা জারী করেন।
৬- “হাইকোট করেছে তো কী হয়েছে, সুপ্রীম কোট আছে না”। সুতরাং সদাশয় সরকার তড়িৎগতিতে সুপ্রীম কোর্টের শরণাপন্ন হয়। দুঃখের বিষয়, ঈদ উপলক্ষে সুপ্রীম কোর্ট তখন বন্ধ ছিল। সুতরাং এ্যাটর্নি জেনারেল জনাব ফিদা কামাল অবকাশকালীন বিচারক জ্বনাব জয়নুল আবেদীনের শরণাপন্ন হন। মাননীয় বিচারপতি জয়নুল আবেদীন গত ১৮ই ডিসেম্বার হাইকোর্টের আদেশ আগামী ২রা জানুয়ারী (২০০৮) পর্য্যন্ত স্থগিত করে দেন।
৭- সুপ্রীম কোর্টের আদেশ পেয়ে আইয়ুব কাদরী সাহেব আর ২রা জানুয়ারীর জন্যে অপেক্ষা করেননি। কি জানি বাবা, কোথা থেকে আবার কোন্ বাগড়া এসে যায়? চক্রান্তকারীদের তো ছলের অভাব নেই। ভাগ্যিস্, সুপ্রীম কোর্ট ছিল, তাই না বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমুর্তি উজ্জ্বল করার এমন সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগানো গেল। সুতরাং ঈদের দিনই মুর্তিগুলি যাদুঘর থেকে সরিয়ে এয়াপোর্টে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। কর্তব্যনিষ্ঠা আর দেশেপ্রেমের কী অপুর্ব নমুনা। আগে জানতাম- রেডিও, টেলিভিশন, বিদ্যুৎ, ওয়াসা, হাসপাতাল এই সব বিভাগে কর্মরতরাই ঈদের সময় ইমারজেন্সী ডিউটি করে। কাদরী সাহেবের কল্যানে জানা গেল- না, যাদুঘরের কর্মচারীরাও তা করে থাকে। করে থাকে এমনকি মধ্যরাতে, শীতের কাকডাকা ভোরে! এ পর্য্যন্ত সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল, গোল বাধল দেশের মাটি থেকেই মুর্তিগুলি চুরি হওয়ার ঘটনা ফাস হয়ে যাওয়াতে। এই চুরি হওয়ার ঘটনায় শুধু যে মাননীয় এ্যাডভাইজারেরই মুখ পুড়েছে তাই নয়, চক্রান্তকারীদের সন্দেহই যে হান্ড্রেড পারসেন্ট কারেক্ট ছিল- জনমনে সেই ধারণা পোক্ত হয়েছে। হতভাগা চোরের তর সইল না। বিদেশের মাটিতে চুরি করে সেই যায়গায় একটি রেপ্লিকা ভরে দিলেই তো দেশে এত হৈচৈ হয় না, মানুষ জানতেও পারত না যে তাদের অমূল্য প্রত্নসম্পদটি হাতছাড়া হয়ে গেছে। যাদুঘরের কাচের বাক্সে যে বিষ্ণু মুর্তিটি শোভা পাচ্ছে, তা আসল না রেপ্লিকা- তার হদিস্ করে কোন্ পুঙ্গির পুত্? (পাঠকপাঠিকাবৃন্দ, পুঙ্গি শব্দটাকে অশ্লীল বলে পরিত্যাগ করবেন না যেন। প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক সুনীল গাঙ্গুলি, কলামিষ্ট নীরদ সি.চৌধুরি তাদের লেখায় বহুস্থানে এই পুর্ববঙ্গীয় শব্দটি ব্যবহার করে এর ব্রাত্যদোষ স্খালন করে দিয়েছেন। উদাহরণ- ”ঐ হালার গাই, ঐ পুঙ্গির ভাই, আরাঙ্গি মারুম কৈল”। নীরদ সি চৌধুরি)।
যাহোক্, মাননীয় এ্যাডভাইজার আইয়ুব কাদরীর ‘ফাটকা-চেঙ্গীতে’ আটকানো কিংবা গুটিকয়েক মুর্তি খোয়া যাওয়া নিয়ে আমার কোন মাথাব্যাথা নেই। মাওলানা সাঈদীদের দেশে বিষ্ণু মুর্তি চুরি গিয়েছে তো কী হয়েছে, এগুলি বহু আগেই বিদেশে রফতানী করে দেশের মাটি পবিত্র করা উচিৎ ছিল। আমার উদ্বেগ সুপ্রীমকোর্ট-হাইকোর্টে কর্মরত মাননীয় বিচারপতিদের বিপরীতমুখী ভারডিক্ট নিয়ে। আমরা আম্জনেরা আইনের মারপ্যাঁচ বুঝি না। আমাদের সোজা বুদ্ধিতে দুইয়ে দুইয়ে চার হয়। হাইকোর্ট রায় দিল - “টু প্লাস টু ইকুয়ালস ফোর”। সেই রায় যখন আইনের মারপাঁচে সুপ্রীম কোর্টে যেয়ে শূন্য হয়ে যায় তখন অবাক না হয়ে পারি না। শুধু আলোচ্য মামলা নয়, ইদানীংকালে বেশকিছু মামলায় হাইকোর্টে হেরে যেয়ে সরকার সুপ্রীম কোর্টে আপিল করেছে। প্রতিটি মামলায় সরকারপক্ষের ফেবারে রায় দিয়েছে সুপ্রীমকোর্ট। তা’হলে ঘটনা কী দাড়ালো? হাইকোর্ট বলছে- জিনিসটি শাদা, সুপ্রীম কোর্ট বলছে- না এটি শাদা নয়, কালো। হাইকোর্ট বলছে- কাজটি অন্যায়, সুপ্রীম কোর্ট বলছে- না কাজটি অন্যায় নয়, ন্যায়! একটি দু’টি ক্ষেত্রে এরূপ হলে কোন কথা ছিল না, কিন্তু একই ধরণের অনেকগুলি মামলায় যখন এই ধরণের বিপরীতমুখী রায় লক্ষ্য করা যায় তখন জনগণ বিভ্রান্ত না হয়ে পারে না। একটি পক্ষ নিশ্চিতভাবে আইনের ভুল ব্যখ্যা করছে, সেই পক্ষ কোনটি? হাইকোর্ট না সুপ্রীম কোর্ট? সুপ্রীম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কোন আপীল চলে না, সুতরাং বলা যায় যে হাই কোর্টের রায় ক্রুটিযুক্ত ছিল। যদি তাই হয়, তাহলে প্রশ্ন- পর পর এতগুলি ভুল রায় দান করে যে হাইকোর্ট, জনগণের পয়সা অপচয় করে সেই কোর্ট রাখার দরকারটা কি? শেখ হাসিনার মামলা পরিচালনাকারী ব্যারিষ্টর রফিক তাই হয়তো সক্ষোভে বলেছিলেন- ‘এভাবে যদি হাইকোর্টের প্রতিটি আদেশকে নাকচ করা হয় তাহলে হাইকোর্ট রেখে আর কাজ কি, উঠিয়ে দিলেই হয়’। বর্তমান মুর্তি পাচারের মামলায় হাইকোর্টের রায় যদি বহাল থাকতো, তাহলে হয়তো দেশের এত বড় সর্বনাশটি ঘটতে পারতো না! শুধু দু’টিমাত্র বিষ্ণুমর্তি খোয়া যাওয়ার মধ্যে ঘটনা সীমাবদ্ধ থাকবে বলে মনে হয় না। পত্রিকান্তরের রিপোর্টে দেখা যায়, দ্বিতীয় চালানটি বাতিল হওয়াতে গিমে যাদুঘর কতৃপক্ষ হাড়ে হাড়ে চটে গেছে, চুক্তিভঙ্গ করার কারণ দেখিয়ে কীভাবে প্রথম চালানটি আটকে দেয়া যায় তার ফন্দিফিকির করছে। যদি ঘটনা সেদিকেই গড়ায়, তা হবে বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের উপর এক প্রচন্ড আঘাত। এই অপুরণীয় ক্ষতির কারণ হিসেবে শুধু বাংলাদেশ সরকারকে এককভাবে দায়ী করলে চলবে না, আমাদের লিগাল সিষ্টেম তথা সর্বোচ্চ বিচারাসনে যে সব মহামান্যরা বসে আছেন তাদের দায়ীত্বও কম নয়।
বিচারাঙ্গন তথা বিচারপতিরা মানুষের শেষ নির্ভরস্থল। অন্যায়ের বিরুদ্ধে, প্রবলের বিরুদ্ধে অসহায় মানুষের শেষ প্রতিকারের জায়গা হচ্ছে আদালত। বিচারপতিরা কোন ভিন্গ্রহের প্রাণী নন, আমাদের মতো তারাও আহার-নিদ্রা-মৈথুনের অধীন। তবুও রাষ্ট্র তাদের উপর এমন দায়ীত্ব অর্পন করেছে যে সাধারণ হয়েও তাদেরকে অসাধারণ হতে হয়। বিচারাসনে উপবিষ্ট একজন বিচারপতিকে “মি লর্ড” বলে অভিহিত করতে হয়, কারণ বিচারাসনে উপবিষ্ট একজন বিচারপতি মানুষ হলেও তিনি তখন বিশ্ব লর্ডের প্রতিভু-। এই উপ-মহাদেশের ইতিহাসেও আমরা এমন নির্ভিক বিচারক দেখেছি যিনি রাষ্ট্রের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সঠিক রায় দিতে পেছপা হননি। পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি ইফতেখার চৌধুরি এই মডেলের বিচারপতিদের লেটেষ্ট উদাহরণ। বেলুচিস্তানের কসাই বলে অভিহিত টিক্কা খানকে শপথ করাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন যিনি, তিনি ছিলেন এই দেশেরই একজন বিচারপতি। পক্ষান্তরে এমন বিচারপতিও দেখেছি যারা সংবিধানের অধীনে শপথ নিয়েও অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক একনায়কগণের পা চাটতে বিন্দুমাত্র বিবেকের পীড়া অনুভব করেননি। বিচারপতি এম.এ.আজিজ, বিচারপতি ফয়েজী, বিচারপতি চুন্নু- ভাড়সদৃশ্য এসব বিচারপতিদের স্মৃতি তো একেবারেই টাটকা।
আমাদের প্রধান বিচারপতি জ্বনাব রুহুল আমি প্রায়শই বিভিন্ন সভাসেমিনারে মূল্যবান বক্তব্য বিতরণ করে থাকেন। তার আমলে বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ হতে স্বাধীন হয়েছে বলে তিনি আত্মতুষ্টি উপভোগ করতে পারেন। তার ন্যায়পরায়নতার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে নিবেদন করছি- বিচারব্যবস্থা স্বাধীন হওয়াতে আমরাও সমভাবে খুশী হয়েছিলাম। কিন্তু স্বাধীন হওয়ার পর গত কয়েকদিনে যে কয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিচারকাজ “দর্শন” করলাম, তাতে করে পুর্বের নির্বাহি বিচারকদের চেয়ে বর্তমানের জুডিসিয়াল বিচারকদের ভিন্ন প্রজাতির কিছু বলে মনে হয়নি। এই ট্র্যাডিশন চলতে থাকলে বিচারবিভাগ পৃথকীকরণের সুফল জনগণ কখনও পাবে না। “অশ্বত্থামা হতঃ ইতি গজঃ”। অশ্বত্থামা নামের হাতিটি মরেছে, তবে অশ্বত্থামা নামের মানুষটি সগৌরবে বেঁচে আছে।
বিচারকরা অন্যের বিচার করেন। তবে বিচারকদের বিচার করার উপায় নেই বললেই চলে। একেবারে যে নাই তা নয়, এক অদৃশ্য সর্বশক্তিমান বিচারক আছে- জাগ্রত জনতা। “বিচারপতি তোমার বিচার করবে কারা আজ জেগেছে সেই জনতা”। সেই জনতার আদালতে সায়েম-সাত্তার-আজিজ-ফয়েজি-চুন্নুদের মতো বিচারকরা চিরদিন নৈতিকতাহীন ধিকৃত জীব হিসেবেই বিরাজ করবে, মহামান্য বিচারক হিসেবে নয়। আমাদের উচ্চ আদালতগুলিতে যেসব মহামান্যরা বসে আছেন, তারা উক্ত ধিকৃত জনদের দলে ভিড়বেন না, জনগণ সেই প্রত্যাশা করে।
২৬-১২-২০০৭