নির্মলেন্দু গুণের কাব্যকামকুশলতা

সুশান্ত বর্মন

মানুষের সক্রিয় কামপ্রবণতাকে বিভিন্ন সমাজে, মতাদর্শে, দর্শনে, নীতিবোধে অশ্লীল এবং অসমর্থনযোগ্য বলে মনে করা হয়ে থাকেকামজ প্রত্যাশার স্বচ্ছন্দ প্রবহমানতাকে একাধিক সামাজিক নিয়মনীতি নৈতিকতার নামে বিভিন্ন সময়কালে বিভিন্ন নিষেধের বেড়াজালে আটকে রাখার চেষ্টা করতো, এখনও করেআধুনিক যুগেও নারী-পুরুষের এই সহজাত, সাবলীল, আনন্দময় ও ব্যাকুল সম্পর্কটিকে বিবাহ নামক কৃত্রিম প্রতিষ্ঠানের দেয়াল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়কিন্তু প্রাচীন ভারতবর্ষীয় নীতিবোধে নারী-পুরুষের এই সহজ সম্পর্ককে অস্বীকার করা হতোনাতাই সেই যুগে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা ছিল মুক্ত ও স্বাধীনজীবনযাত্রার অবাধ ও সানন্দ প্রবাহ প্রাচীন ভারতবর্ষে প্রচলিত ছিলতাই সেই সময়ের সমাজ ছিল স্বচ্ছন্দ ও প্রাণোচ্ছলনর-নারীর মৌলিক সম্পর্ক যৌনসম্বন্ধ নিয়ে সেকালের সমাজে কোনো কূপমণ্ডূকতা ছিল নানারী যেমন নিজের শরীরের প্রয়োজনে কাক্ষা করতো পুরুষশরীর, পুরুষও তেমনি নিজের প্রয়োজনেই যাঞ্চা করতো নারীশরীরশরীর বিষয়ে কোন সংস্কার তাঁরা মনের গোপন গহীনে লালন করতো নাবাঁধা হয়ে দাঁড়াতো না কোনো সামাজিক রক্তচক্ষু এমনি অবাধ, স্বচ্ছন্দ, উদার, চিরকাক্ষিত ও ধ্রুপদী জীবনপ্রবাহের যুগেই জন্মেছিলেন ঋষি বাসায়নসমগ্র পৃথিবীতে তিনিই প্রথম নারী-পুরুষের যৌনজীবন এবং তার বিভিন্ন দিক নিয়ে রচনা করেছেন অসাধারণ গবেষণাগ্রন্থ কামসূত্রকামসূত্রশাস্ত্রটির যৌক্তিকতা, মৌলিকতা, তথ্যের প্রাচুর্য অর্থা বিষয়ের বিচিত্র ব্যাপকতা এত শক্তিশালী ছিল যে বর্তমানে সারা পৃথিবীতে যৌনবিজ্ঞান বিষয়ক প্রথম গ্রন্থ হিসেবে কামসূত্রসম্মানিত হয়এই চির আধুনিক গ্রন্থ কামসূত্ররচনা করতে গিয়ে বাসায়নের থাকতে হয়েছিল যৌনবিষয়ে সন্ধানী, যুক্তিবাদী, কৌতুহলী, বিশ্লেষণপ্রবণ এবং নির্মোহ একটি মন ঋষিসুলভ প্রাজ্ঞ অন্বেষণ দিয়ে বাসায়ন নারীশরীর ও পুরুষশরীরের প্রতি বর্গইঞ্চির প্রতিটি সুগন্ধকে চিহ্নিত করতে পেরেছিলেন তাই তিনি মৈথুন বিষয়ে পোষণ করতেন উদার ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গীমানব শরীরের প্রতিটি ভাঁজ-বাঁকে লুকিয়ে থাকে যে আনন্দ সেই আনন্দ অন্বেষায় বাসায়ন ছিলেন মৌলিক, নান্দনিক ও বৈজ্ঞানিক মনোভঙ্গীর অধিকারী তিনি উপলব্ধি করেছিলেন নর-নারী সম্পর্কের প্রধান ভিত্তি শরীরপ্রেম বা ভালোবাসা নামক কল্পিত বিষয়টি মূলতঃ গাছে ফোটা ফুলের মতো বড়ই বাহ্যিকতার রং ও সৌন্দর্যটা সহজে চোখে পড়ে কিন্তু যা মূল তা থেকে যায় চোখের আড়ালেবাসায়ন অন্যদের মতো শুধু ফুল দেখে মুগ্ধ হননিবৈজ্ঞানিক সচেতনতা নিয়ে খুঁজে বের করেছেন গাছের প্রাণের উস শিকড়কে তথা নর-নারীর প্রাণোচ্ছলতার শুদ্ধ উস কামপ্রবণতাকে 

প্রাজ্ঞ কবি নির্মলেন্দু গুণ উপলব্ধি করেছেন নর-নারী সম্পর্কের আদি ও মৌলিক উসটি এখনও যথেষ্ট ক্রিয়াশীলমানুষের গভীর সম্পর্ক ও আকর্ষণের ভিত্তি এখনও শরীরমানুষ হিসেবে- পুরুষ হিসেবে নির্মলেন্দু গুণ এই ধ্রপদী ও জৈবিক  প্রত্যাশাকে প্রবলভাবে নিজের জীবনে অনুভব করেছেনবাসায়নকাব্যটি তাঁর এই মানবিক বোধের সতেজ প্রস্ফুটনতিনি পুরুষ হিসেবে নারীর শরীরের প্রতিটি গিরিগুহাকে, প্রতিটি স্পর্শকে, প্রতিটি আলিঙ্গনকে, প্রতিটি শীকারকে প্রবল প্রাণপ্রবণতায় উপভোগ করেছেনপুরুষ নির্মলেন্দু একলব্যের অধ্যবসায়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়েছেন নারীর শরীর ও কামসূত্রকেতাঁর কবিমন ও কাব্যকামকুশলতাআশ্রয় পেয়েছে শরীর মন্থনেতিনি জানেন মানুষের সর্বোচ্চ আনন্দের অনুভূতি ও জ্ঞানের উপলব্ধি ঘটে এই শরীর বিনিময়েইতাই তিনিই বলতে পারেন-

আনন্দের শ্রেষ্ঠ উস হচ্ছে কাম

কাম থেকে জন্ম নিয়েছে কবি 

জীবনচেতনার সামগ্রিক উপলব্ধির শীর্ষে দাঁড়িয়ে কবি বুঝেছেন-

যখন আমি নগ্ন হই

তখনই আমি কবি 

নিজে পুরুষ বলেই তাঁর কাছে নারী এক অন্য জাগতিক উল্লাসের বার্তা বয়ে আনেযে অনাস্বাদিত অনুভূতি তাঁকে জাগিয়ে তোলে মৌনতা থেকে, সেই আনন্দলোকের উচ্চারণ তিনি মুখরা নারীর মুখের নীরব ভাষাতে পড়ে পুলকিত হন ছুটে যান বাঞ্চিত নারীর কাছে

আমি যাই, আমি ছুটে যাই; আমি

কামভিখিরির মত কপর্দকশূন্য করপুটে

তোমার অগ্নির টানে ছুটে যাই, হাওয়া

তারপরও তিনি নিশ্চিত নন, তাঁর অন্বেষণ গন্তব্যে পৌঁছাবে কি না তিনি মনে করেন-

কাম নিয়ে আমি যত সাধনা করেছি,

শ্রীঅমর্ত্য সেনও মনে হয় না তত

এই কাজে আমি যত শ্রম দিয়েছি,

তত শ্রম ষ্টেশনের কুলিও দেবে না

তারপরও আমার কাটে না সংশয়,

আমার কি হয়? কোনো কিছু হয়?” 

প্রকৃতিপ্রেমী কবি প্রকৃতির মাঝেই বারবার খুঁজে পান তাঁর কামচরিতার্থতাপ্রকৃতি ক্রমাগত কামসুলভ আনন্দ আহ্বান নিয়ে তাঁর সামনে নিজেকে উন্মোচন করে-

রাত্রি হচ্ছে একটি কামার্ত কালো মেয়ে

নিজেকে লুকিয়ে না রেখে তিনি অকপটে বর্ণনা করেন তাঁর পুনর্জন্মের কথামালা-

বর্ষা ছিল পাকতে-শুরু ডাঁসা ভুবির স্তনে,

দিন-দুপুরে আঁধার করা যোগীশাসন বনে

বর্ষা ছিল ধান-ডোবানো মাঠ-ভাসানো জলে,

সাঁতার কাঁটা বুনো হাঁসের কামার্ত দঙ্গলে

তাদের কাছেই চিনেছিলাম তেপান্তরের মাঠ,

তারাই আমায় দিয়েছিল কামশাস্ত্রের পাঠ

কামকলাতে এই যে আমার একটু বাহাদুরি,

বর্ষাবালার কাছ থেকে তা করেছিলাম চুরি 

তিনি স্ববিরোধী ননতাই জীবনের অন্তরস্থ গভীর বাস্তব এবং মানুষের মানসপটে যে সূর্যটি চির দীপ্যমান তা তাঁর কাছে অচেনা নয়তিনি স্বীকার করেন-

এই যে আকাশ ভরা তারা,

এই যে বাগান ভরা ফুল,

এই যে অরণ্য ভরা পাখি,

এই যে সমুদ্র ভরা জল-

এর সকলই তোমার লীলা,

তোমার মেহেরবাণী, সবই

গতরাত্রির কৃতকর্মের ফল 

জীবনপ্রেমী কবি জানেন তাঁর কবিমনের গতিপথএ মানসবোধে কামজ অনুভূতির মূল্য এবং ভূমিকা অনেক বেশিএকারণে নিজেকে হাতের মুঠোয় তুলে ধরতে তাঁর কোনো দ্বিধা নেই

সেই আমাকে অধিক পায়,

যে আমাকে কামের চুলায়

কাঠের মতো পুড়িতে দেয়।....

সেই আমাকে অধিক পায়,

যে আমাকে নাড়ায় না

যে আমাকে স্বাধীন রাখে

সে আমাকে হারায় না

শৈশবে মাকে হারিয়ে কবি বঞ্চিত হয়েছেন স্তনদুগ্ধসুধা পানেস্তনতৃষ্ণা তাঁর মন থেকে কখনো মুছে যায়নি-

আমার স্তনস্তবমুখরিত কবিতায়, তাই

দুগ্ধবতী নারীরা হয়েছে আমার ঈশ্বরী” 

তিনি নারীর বুকের পুষ্পযুগলের অপরূপ শোভা প্রাণভরে উপভোগ করেছেনবিকশিত পুষ্পদ্বয়ের গভীরে প্রাণরূপ মধু ও কামরূপ শক্তির যে বিরাট খনি লুকিয়ে আছে তার সৌন্দর্য দেখে মোহিত হয়েছেন তিনি এই অপার্থিব গিরিদ্বয়ে কখনো দেখেছেন সন্তানের প্রাণোসের ঝর্ণাধারাকে আবার কখনো দেখেছেন তার অভ্যন্তরস্থ কামুক বিস্ফোরণ শক্তিকেকামশাস্ত্রজ্ঞ যে কবি বিস্ময়ে তাকিয়ে তাকিয়ে-

দেখিলেন সেই অপরূপ শোভা,

মনোলোভা, নিদ্রিতা, নিশ্চুপ

সেই তিনিই দেখেছেন সুপ্ত আগ্নেয়গিরির মতো সুডৌল পুস্পকলি দুটি প্রস্ফুটনের জন্য অপেক্ষা করে পুরুষআঙ্গুলের সামান্য স্পর্শের, আর তারপরেই ঘটে যায় মহাবিস্ফোরণ-

অসতর্ক পুরুষ-আঙুলের

সামান্য আঘাতে বিভাজিত হল

পরমাণু, বিস্ফোরিত হল বোমা 

নির্মলেন্দু গুণের জীবনে কবিতা ও সেই সম্পর্কিত প্রতিটি অবস্থানই চিরকাক্সক্ষারতিনি দেখেছেন তাঁর সমস্ত কাব্যসাধনা, কাব্যযশ এবং কাব্যকামকুশলতার প্রধান উস কাম সমকালীন বাস্তববিমুখ মানুষের কাছে তা অপরিচিত হলেও প্রেমিক কবি চণ্ডীদাশ ও বাসায়নকে অনুধাবন করে তিনি জেনে নিয়েছেন পরম সত্যটিকে-

তাঁরই কল্যাণে নারীকে চিনেছি,

শিখেছি সঙ্গম কলা, রতিরঙ্গরস;

তা না হলে সকলি গরল ভেল,

কামসিদ্ধি বিনা ব্যর্থ কাব্যযশ 

সভ্যতাগর্বী, ধর্মবাদী কিংবা নীতিবাগীশ ব্যক্তিরা মানুষের মন ও দেহকে নিরন্তর নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছেহাজার বছর আগে থেকেই দেহকে মন থেকে বিযুক্ত করার চেষ্টা ছিল তাঁদেরকিন্তু মানবিক মানবতা এই নাগপাঁশ ছিন্ন করার চেষ্টা করেছে বারবার

মনকে ধারণ করে দেহ

নাকি দেহ মনেরই প্রকাশ?” এই অমীমাংসিত প্রশ্ন বাসায়নের মতো নির্মলেন্দু গুণকেও বিক্ষত করেছে জীবনভরঅবশেষে উত্তীর্ণ যৌবনে কবি পেয়েছেন সত্যের সন্ধান

বুঝেছেন মন বড় সত্য নয়

মানবের দেহই প্রধান

কারণ মন পাল্টায়ক্রমাগত বাঁদরমন পাল্টায় জলের মতন কালে কালে দেশে দেশে মন বিভিন্ন রূপ ধারণ করে কিন্তু দেহ স্থিরগ্যালিলিওর সত্যের প্রতি অবিচল আস্থার মতো দেহের প্রতি কবির আস্থা অবিচল, স্থির, অপরিবর্তনীয়মনকে প্রাধান্য দিয়ে, দেহকে দমন করে করে, আত্মপীড়ন রণেমানুষ যতই পারদর্শীতা অর্জন করুক তা মোটেও মৌলিক ও প্রাকৃতিক নয়তা কৃত্রিম; স্বমেহনের মতো, আত্মরতিসুখের মতো নিজেকে ক্রমাগত আলিঙ্গনে আলিঙ্গনে পীড়িত করতে থাকেপুরুষ প্রকৃতির প্রধান সহায় নারীর কাছে কবি তাই জোর দাবী জানান-

আমি চাই তুমি

আমাকে শ্রবণ কর,

আমাকে দ্রবণ কর

তোমার ভিতরে 

বৈচিত্র্যপ্রবণ রমণীরা কবির সামনে উপস্থিত হয় বিভিন্ন রূপেপুরুষ কবি নারীদের বিচিত্র উপস্থাপনায় নিজেকে হারিয়ে ফেলেন সময়ের আকাশেতিনি বুঝে ফেলেন নারীর নূপুরশিকলে বাঁধা পড়ে গেছেন চিরকালের মতোতবে এ নিয়ে তাঁর মনে কোনো খেদ নেই বরং বারবার তিনি অনুভব করতে চান নারীর অগ্নিশরীর

আমার কাছে অগ্নির চেয়েও

উষ্ণ মনে হয়েছিল নারীকে

তাই আমাকে বরফ-রাতে

নারীর তাতে পুড়িয়েছিলাম

আমার কাছে লোহার চেয়েও

ভারী মনে হয়েছিল নারীকে,

তবুও তাকে শিবের মতোন

মাথায় তুলে ঘুরিয়েছিলাম 

একালে মানুষ ভেঙ্গে বহুধাবিভক্ত হয়ে গেছেধর্মনীতি, রাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি প্রভৃতি নীতির অজুহাতে মানুষ ক্রমাগত পরস্পরের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেসভ্যতার আলোয় আলোকিত মানুষ আলোর প্রাবল্যে বিপন্ন বোধ করছে; শত্র ভাবছে সকলকেএমন বিদঘুটে সমাজ কাঠামোতেও মানব দরদী কবি প্রতিনিয়ত খুঁজে বেড়ান মানুষ ও মনুষ্যত্বকেসমাজ-রাষ্ট্র অর্থা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি খুঁজে বেড়ান প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মানুষকেকিন্তু সমকালীন কবি লক্ষ্য করেন মানুষ এখন আর অনেকাংশে মানুষ নেইকখনো পশুবৃত্তি কখনো কবিতাবৃত্তি কখনো স্বার্থমুখী কখনো বৃক্ষমুখী অর্থা এক মহাকালিক স্ববিরোধিতা মানুষকে অনেকাংশেই মানবেতর প্রাণীতে পরিণত করেছেকৃত্রিম জৌলুষ ও চাকচিক্যতেই মানুষ এখন আচ্ছন্নযা মোটেও মানুষের মানবিক বোধের সচেতন প্রকাশ ঘটায়নামানুষের এই সামগ্রিক স্ববিরোধিতায় ক্ষুব্ধ কবি মনে করেন-

মানুষকে কখনোই আমার

শ্রেষ্ঠ প্রাণী মনে হয়নি

আমি মানুষের চেয়ে বেশি

ভালোবাসি হাঁসের সঙ্গম

তাই বলে কবি মানুষের এই কালিক সীমাবদ্ধতা দেখে হতাশায় ভেঙ্গে পড়েন নাজীবনের মূল্য খুঁজতে তিনি মানুষ থেকে দূরে চলে যাননিবরং মানুষের মাঝেই বারবার খুঁজেছেন মানুষের মানবিক মনুষ্যত্ব

অনিবৃত্ত কামের অগ্নিতে

যখন ডালির জেব্রার মতো

ঝলসে গিয়েছে এই দেহ,

তখন গণিকার পদতলেই

আমি খুঁজে পেয়েছিলাম

আমার বেহেশ্ত

এবং তিনি অহংকারীও নননিজেকে বারবার প্রশ্ন করেন-

মাঝে-মাঝে আমি ভাবি, ভাবি

আমার কাব্যকামকুশলতা নিয়ে

এই যে আমি গর্ব করে চলেছি,

আমার কি আদৌ কিছু হচ্ছে?” 

বাসায়নগ্রন্থের প্রথমেই তিনি নিজের ভিতরে, মানুষের ভিতরে খুঁজেছেন, খুঁজতে বলেছেন গভীর ও গোপন সেই অনুভূতিটিকে যে অনুভূতি মানুষকে জাগিয়ে রাখে জীবনভর, মানুষকে উপলব্ধি করায় জীবিত বলে আবিষ্কার করতে চেয়েছেন পৃথিবীর প্রথম ও চিরকালীন মানবসত্যকেবুঝতে চেয়েছেন মানুষ হিসাবে আমাদের আগ্রহ, দায়িত্ব, কর্তব্য ও উদ্দেশ্যকেপাঠ করতে চেয়েছেন মানব মনের গোপন গ্রন্থকেযা তিনি পেয়েছেন তাই আসলে সমগ্ররূপ ধারণ করেছে তাঁর সামগ্রিক কাব্যকামকুশলতাকালব্যাপী নিরন্তর অন্বেষণে তাঁর সামনে মুখোমুখি হয়ে দাঁড়িয়েছে একটি মাত্র প্রধান প্রশ্ন-

ভিতরে তোমার ঘুমাচ্ছে না, কে?

জীবনবিচ্যুত জড়ের মৌনতা,

না কি সুখ-বুদ্ধি চতুর যৌনতা?

অনুসন্ধান কর, অনুসন্ধান কর